সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নে গগডা আটকান্দিয়া গ্রামের আব্দুল বারেকের পুকুর থেকে রবিবার দুপুরে স্কুলছাত্র জনির (১১) বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জনি গগডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ত। সে ওই গ্রামের কৃষক আব্দুস সোবহানের ছেলে। 

জনির বাবা আব্দুস সোবহান জানান, মাত্র ১ দিন বয়সেই তার এই ছেলেকে নি:সন্তান বড়ভাই আব্দুল ক্বারীর হাতে তুলে দেয়া হয়।

আব্দুল ক্বারী পৈতৃক বাড়ি থেকে গিয়ে কেন্দুয়া পৌরশহরের চন্দগাতী এলাকায় বসবাস করেন। সেখানেই আব্দুল ক্বারী ও তার স্ত্রী ঝরনা আক্তার জনিকে পুত্র স্নেহে লালন পালন করেন। জনি চন্দগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই এতদিন লেখাপড়া করেছে। কিন্তু ৬ মাস আগে জনির সৎ মা ঝরনা আক্তার গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরবে চলে যান। যাবার আগে তার পালিত সন্তানকে জনির প্রকৃত মা বাবার কাছেই রেখে যান।

পারিবারিক সূত্র আরো জানায়, শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় জনি। এর পর আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজ খবর নিয়েও তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলনা। শনিবার সারা দিন জনির নিখোঁজ সংবাদ সারা এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয়। রবিবার সকাল অনুমান এগারোটার দিকে বাড়ির ছেলেমেয়েরা পুকুরে গোসল করতে নেমে একটি বস্তার সন্ধান পায়। পরে ছেলেমেয়েরা বাড়ির মুরুব্বিলোকদের খবর দেয়। বাড়ির মুরুব্বিলোকরা পুকুরে নেমে বস্তার মুখ খুলে দেখে একটি শিশুর লাশ। পরে থানা পুলিশে খবর দেয়া হয়।

খবর পেয়ে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া, কেন্দুয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাহমুদ হাসান, কেন্দুয়া থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশ বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

কেন্দুয়া থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিবেশী রইছ উদ্দিনের সঙ্গে আব্দুস সোবহানের পারিবারিক দ্বন্দ ছিল। ধারনা করা হচ্ছে কে বা কারা শিশুটিকে গলাটিপে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে রেখেছে।

এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। একই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই গ্রামের সাহাব উদ্দিন (৫০), বাচ্চু মিয়া (৪০), মাজু মিয়া (৫০), বাবুল মিয়া (৪২) ও রইছ উদ্দিনকে (৫৫) আটক করা হয়েছে। তিনি জানান, ময়না তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৮)