বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ডাক্তারের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন প্রসূতির সাথে থাকা তার বৃদ্ধ মা নাসিমা বেগম (৫৫)।

রবিবার সকালে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডের জুনিয়র কনসালটেড ( গাইনী) ডা. আবুল কালাম আজাদ ওই ওয়ার্ডের ৪নং বেডে থাকা প্রসুতি রোজিনা বেগমের মায়ের সাথে এই ঘটনা ঘটান।

ভুক্তভোগী নাসিমা বেগম মোড়েলগঞ্জ উপজেলার গাজিরঘাট গ্রামের মো. ইদ্রিস শেখের স্ত্রী। এঘটনার পর ওই ওয়ার্ডে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবগত করানো হয়েছে বলে জানান বাগেরহাটের সিভিল সার্জন।

ডাক্তারের হাতে মারধরের শিকার নাসিমা বেগম বলেন, ‘রবিবার সকালে আমার মেয়ে রোজিনা বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে আমরা বাগেরহাট সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। পরে সকালে ডাক্তার রাউন্ডে আসলে রোগীর সাথে থাকা স্বজনদের বের হয়ে যেতে বলা হয়। এসময় আমার মেয়ে তীব্র প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিল। তাকে আমি বেডে জোর করে ধরে রাখি। ডাক্তার এসে আমাকে দেখে জোরে আমার পিঠে আঘাত করে। তখন আমি রোগীর মা বললে আবারো মুখে স্বজোরে চড় মারে।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বাগেরহাট সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা গ্রামের কাকলি বেগম বলেন, মেয়েটি প্রসাববেদনায় কাতরাচ্ছিল। তার মা তাকে ধরে রাখে। ডাক্তার এসেই তাকে মারপিট শুরু হরে। একজন ডাক্তারের এমন ব্যবহার আগে কখনও দেখিনি।

পাশের বেড়ে থাকা প্রসুতি অপরাজিতা রায় জানান, ডাক্তারের মারপিট ও ব্যবহারে আমরা আতংকিত হয়ে পড়ি। এমন আচারণ একজন ডাক্তারের হতে পারেনা। অন্য রোগীদের সাথেও এই ডাক্তার খারাপ আচারণ করেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ডা. আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি তার ব্যবহৃত মোবাইল রিসিভ করেননি।

জানতে চাইলে বাগেরহাটের বিশিষ্ট সমাজসেবী আওয়ামী লীগ নেত্রী রীনা তালুকদার বলেন, একজন মানুষ বিপদে পড়েই হাসপাতালে আসে। তার সাথে এমন আচারণ কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তিনি এঘটনার তদন্তপূর্বক ব্যবস্থ্যা গ্রহনের জন্য যথাযত কতৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানান।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. অরুণ চন্দ্র মন্ডল বলেন, রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে খোঁজখবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। একজন ডাক্তারের এমন আচারণ হওয়া কারো কাম্য নয়। বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্ধতন কতৃপক্ষকে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে। উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী অভিযুক্ত ডাক্তারের পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

(এসএকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৮)