বাকৃবি প্রতিনিধি : বিশ্বে প্রথমবারের মতো ইলিশের জীবনরহস্য আবিষ্কারের বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) এর গবেষকরা বলেছেন, আমরা ১০ সেপ্টেম্বর আবিষ্কারটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার জন্য অনেকদিন যাবৎ কাজ করছি। যখনই আমরা অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করলাম, দেখা গেল অন্য কেউ একটি মাত্র জাতীয় দৈনিকে তড়িঘড়ি করে প্রতিবেদন ছাপলো। যেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। একই বিষয়ে অনেকে একই সময়ে গবেষণা করতেই পারে। আমাদের গবেষণাটি অনেক আগে সম্পন্ন করেছি এবং বিভিন্ন স্থানে তার প্রমাণ রয়েছে।

তারা বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গ্রান্ড কমিশনের একটা সুপার কম্পিউটার আছে যা অনেকেরই অজানা। সেটা আমাদের গবেষণায় ব্যাপক সহায়তা করেছে। একটি প্রথম সারির দৈনিক পত্রিকা উল্লেখ করেছে আমাদের দেশে এ সক্ষমতা নেই যেটা ভুল।

সোমবার বাকৃবির সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ইলিশের জীবনরহস্য আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণাকালে তারা এ কথা বলেন।

এর আগে প্রথমবারের মতো ‘ইলিশের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকেয়েন্সিং এবং ডি নোভো অ্যাসেম্বলি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর ইলিশের জীবনরহস্য আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।

এ সময় গবেষকরা বলেন, আবিষ্কারের এটা মাত্র সূচনা ঘটেছে। আবিষ্কারটি বুঝতে ও সফলতা পেতে আমাদের আরো সময় লাগবে। আমাদের এর সুফল পেতে আরো ধারাবাহিক গবেষণা করা প্রয়োজন। ইলিশ রক্ষায় অনেক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে যেমন অভাশ্রয়ম প্রতিষ্ঠা, নির্দিষ্ট সময়ে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা ইত্যাদি। এটা সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে হচ্ছে কিনা এমন অনেক বির্তক রয়েছে।

ইলিশ নদীতে কেন আসে আবার প্রজননের পর আদৌ সাগরে ফিরে যায় কিনা এমন অনেক তথ্যই এখন আমরা জানতে পারবো এই আবিষ্কারের তথ্যকে কাজে লাগিয়ে। এই আবিষ্কারের ফলে দেশের সুনাম আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা।

আবিষ্কারের সহযোগী গবেষক অধ্যাপক ড. মুহা. গোলাম কাদের খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদসহ ইলিশের জীবনরহস্য উন্মোচনকারী গবেষকরা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও বৈজ্ঞানিকরা।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মো. সামসুল আলম ও সহযোগী গবেষক অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্যা।

উল্লেখ্য, বাকৃবির গবেষকদের বিষয়টি সামনে আসার একদিন আগেই গত ৭ সেপ্টেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ইলিশের জীবনরহস্য আবিষ্কার’র দাবি তোলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তাদের দাবি তারাই প্রথম ইলিশের জীবনরহস্য আবিষ্কার করেছেন।

অধ্যাপক হাসিনা খানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মোলেকুলার বায়োলজি বিভাগের একদল গবেষক এ দাবি তোলেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৮)