মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নেত্রকোনা মদন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের গাড়ি চালক মোঃ জামরুল ইসলাম কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে  প্রায় তিন মাস যাবৎ কর্মস্থলে  না এসে আত্মগোপনে রয়েছে। কর্মস্থলে না আসায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাকে দুইবার কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়।

উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৯ মে ২০১২ ইং তারিখে গাড়ি চালক হিসেবে মদন উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে যোগদান করে মোঃ জামরুল ।

হঠাৎ গত ২৮ জুন ২০১৮ ইং তারিখ হতে ৩ জুলাই ২০১৮ ইং তারিখে কর্মস্থলে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি না নিয়ে অদ্যাবধি পর্যন্ত অনুপস্থিত থাকায় ৩ জুলাই তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। পূর্ববতিতে আবারো ১২ জুলাই ২য় বার কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

বিনানুমতিতে অফিসে অনুপস্থিতির কারণে কেন তার বিরুদ্ধে সরকারী কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপীল বিধি ১৯৮৫ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় ও গণকর্মচারী (নিয়মিত উপস্থিত) শৃংখলা অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর যথাযথ ধারায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এবং অনুপস্থিতির দিনে কেন তার বেতন কর্তন করা হবে না তার জবাব পত্র প্রাপ্তির ৭ কার্যদিবসে কারণ দর্শানোর জবাব দেওয়ার কথা থাকলেও কোন জবাব দেয়নি। বরং কোন রকমের যোগাযোগ না করে আতœগোপনে চলে গেছেন। তার মোবাইল ০১৭২৯-৮২০৮২১ ও ০১৭৪৯-৪৩৯৫৪৮ নম্বরে যোগাযোগ করেও পাওয়া যাচ্ছে না।

অন্য একটি সূত্রে জানা যায়, জামরুল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের গাড়ী চালক হিসেবে নিয়োগ পান তার চাচা শামীম উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ি চালকের তদবিরে। এ সুবাদে বিভিন্ন লোকজনকে নলকূপ,সৌর বিদ্যুৎ,শেলাই মেশিন ও সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিদা দেওয়ায় কথা বলে লোকজনের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আতœগোপনে রয়েছেন। ফলে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সভা ও পরিদর্শন কার্যক্রমসহ সরকারি কাজে অংশ গ্রহণ করতে সমস্যা হচ্ছে উপজেলা চেয়ারম্যানের।

তার প্রতারণার স্বীকার কাইটাইল ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি মেম্বার দেবাশীষদে অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৬ মাস আগে আমার নিকট থেকে আর্সেনিক মুক্ত টিউবয়েল দেবে বলে ১০ হাজার টাকা নেয়। এখন তাকে খোঁজে পাই না। আমার মতো আরো অনেক লোকের নিকট থেকে সে টাকা নিয়েছে।

চাচা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ি চালক শামীমের নিকট জামরুলের বিষয়ে জানতে চাইলে সে জানায়, জামরুল আমার বাতিজা, লোকজন যদি আমাকে ও দোষারুপ করে তা হলে আমার কিছু বলার নেই। তবে জামরুল আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর কর্মস্থলে যোগদান করবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, গাড়ি চালক জামরুল প্রায় তিন মাস ধরে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে আসছে না। তাকে দুইটি কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে আমি যতটুকু শোনেছি তার নিকট অনেক লোকজন টাকা পায়। কর্মস্থলে না আসলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গাড়ি চালক জামরুলের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করেও সংযোগ না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নি।

(এএমএ/এসপি/সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৮)