স্টাফ রিপোর্টার : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে অস্থায়ী আদালতে আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়া জামিনে থাকবেন কিনা সে বিষয়ে তার আইনজীবীদের কাছে জানতে চেয়েছেন আদালত।

বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত অস্থায়ী ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান আদালতে যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য ছিল। তবে খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় কাস্টডি ওয়ারেন্ট পাঠিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

কাস্টডি ওয়ারেন্টে খালেদা জিয়া আদালতে আসতে পারবেন না বলে জানানো হয়। পরে আদালত মামলাটি পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করেন।

এর আগে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বিচারক আদালতের এজলাসে ওঠেন। এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া খালেদার জামিন বৃদ্ধির আবেদন করেন। এছাড়া আদালতে তিনি একটি দরখাস্ত দেন। দরখাস্তে তিনি আদালতকে অবহিত করেন যে, সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি ছাড়া পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত ঘোষণা করে গেজেট করা সংবিধানের পরিপন্হি ও আইনের বিরোধী। শুনানিতে তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ।

মামলার অপর আসামি জিয়াউল ইসলামের আইনজীবী আমিনুল হক এ বিচার কার্যক্রম আইন সম্মত নয় উল্লেখ করে মামলার কার্যক্রম এক মাসের জন্য স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন।

তিনি বলেন, ১২ এবং ২৪ ফিটের একটি কক্ষে আদালত পরিচালিত হতে পারি কিনা তাও বিবেচনা করার প্রয়োজন। এখানে বসার কোনো জায়গা নেই, সিনিয়রদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এরূপ একটি কক্ষকে মোটেও উন্মুক্ত আদালত বলা যায় না। বিষয়টি প্রধান বিচারপতিকে জানানো হয়েছে।

এরপর দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, মামলাটি আজ (বুধবার) যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ধার্য রয়েছে। এক দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করছেন, অন্যদিকে আদালত বসা নিয়ে প্রশ্ন করছেন।

তাদের শুনানি শেষে বিচারক বলেন, খালেদা জিয়া আসতে পারবেন না বলে কারা কর্তৃপক্ষ কাস্টডি ওয়ারেন্ট পাঠিয়েছে। এ অবস্থায় খালেদা জিয়া জামিনে থাকবেন কিনা অথবা মামলাটি কিভাবে পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে এ বিষয়ে তার আইনজীবীদের শুনানি করতে বলেন।

এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সময় আবেদন করেন। তারা বলেন, আমাদের একটু যুক্তিসংগত সময় দেন। তখন বিচারক বলেন, কালকে (১৩ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার) আপনারা এ বিষয়ে শুনানি করবেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

এছাড়া দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসানকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। একই মামলায় অন্য আসামি খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। রায়ের পর খালেদা জিয়াকে রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮)