ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদী পৌর এলাকায়  বিদ্যালয়ের মাঠ জুড়ে পানি ও কচুরিপানা। সাথে  বড় বড় আগাছা। এরই মধ্যে চলছে পাঠদান। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠ ব্যবহার করতে না পারার পাশাপাশি সাপ-খোপের ঝুঁকিও রয়েছে। এই চিত্র ঈশ্বরদীর প্রথম শ্রেণিভূক্ত পৌরসভার নারিচা ও মশুরিয়াপাড়া এলাকার দুটি বিদ্যালয়ে বিদ্যমান।

সরেজমিন নারিচা-মশুরিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নারিচা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, টিফিন পিরিয়ড সকলেই চুপচাপ। কেউ ছোটাছুটি বা খেলাধূলা করছে না। কারণ বিদ্যালয় দুটি’র মাঠ জলাবদ্ধতা ও কচুরিপানায় পরিপূর্র্ণ। এই মাঠে চলাফেরা করতে গিয়ে পা পিছলে গেলে কাদাপানিতে চুবানি খেতে হয়। নষ্ট হয়ে যায় পোশাক-আশাক। এর সাথে রয়েছে সাপে কামড়ানোর ভীতি।

স্কুল মাঠের ডোবায় স্থানীয় কৃষকরা আবার পাট জাগ দিয়েছেন। পাটের পঁচা দুর্গন্ধ মর্বত্র। আবার সেখানে হাঁসও পালন করা হয়। হাঁসের বিষ্ঠার উৎকট গন্ধে টিকে থাকা দায়। এই পরিবেশেই চলছে লেখাপড়া। নাকে রুমাল কিংবা কাপড়-চোপড় দিয়ে চলাফেরা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এলাকাবাসী জানান, বিদ্যালয় দ’ুটির মাঠের জলাবদ্ধতাজনিত সমস্যা প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। এই সমস্যা দূর করতে একাধিকবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন নিবেদন করেও করেও কোনো কাজ হয়নি।

নারিচা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী মিম খাতুন বলে, ‘অন্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় মাঠে খেলাধূলা করে। কিন্তু আমরা তা পারি না। মাঠে পানি, জন্মেছে কচুরিপানা। পানিতে পাট জাগ দেওয়া হয়েছে। পানি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই পচা পানি পায়ে কিংবা গায়ে লাগলে চুলকানি হয়।’

মশুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া ইয়াসমীন বলেন, বিদ্যালয়টি নিচু জায়গায়। তাই সারা বছর মাঠে পানি থাকে। কখনো কখনো পানি বিদ্যালয়ের সিঁড়িতে উঠে আসে। তখন শিক্ষার্থীরা পিছলে পড়ে ব্যথা পায়। পানিতে বই-খাতা পড়ে ভিজে যায় আর জামা-কাপড় নষ্ট হয়।

নারিচা মশুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাগিম উদ্দিন জানান, এই সমস্যা দূর করতে উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভার মেয়র, শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হলেও প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই মেলেনি। তবে সম্প্রতি ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য একটি পাকা রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছেন।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নারগিছ সুলতানা বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। তবে শিগগিরই বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট করার পরিকল্পনা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-মামুন জানান, খোঁজ নিয়ে সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করা হবে।

(এসকেকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮)