উজ্জ্বল হোসাইন : চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি রফ রফের ইঞ্জিন রুমে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়েছে।১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় আকস্মিক এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে চাঁদপুর উত্তর, দক্ষিন ও নৌ-পায়ার স্টেশনের ৩টি ইউনিট পৌনে ১ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিভাতে সক্ষম হয়।

ইঞ্জিনের কাছে থাকা জেনারেটর এর বৈদ্যুৎতিক সর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগার সূত্র পাত হয় বলে স্থানিয় ফায়ার সার্ভিস ও লঞ্চ মালিক পক্ষ সূত্রে জানা যায়। এতে আগুন নেভাতে ও আতংকিত যাত্রীরা ছুটাছুটি করতে গিয়ে কমপক্ষে ১০জন আহত হয়েছেন। এই অগ্নিকান্ডে লঞ্চের দুটি ইঞ্জিনসহ ইঞ্জিন রুমের জেনারেটর, পাওয়ার সেকশন, হাওয়ার মেশিন, ডায়াস মেশিন পুড়ে গেছে।

এছাড়া খাবার কেন্টিন, চায়ের স্টল, দোতলার অংশ বিশেষসহ লঞ্চের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাকিব ওয়াটার ওয়েজের পরিচালক হাজী বেনজির খান। তিনি আরো জানান, ওই সময় লঞ্চে যাত্রী যারাই ছিলেন তারা নিরাপদে এবং অক্ষত ছিলেন। পরের লঞ্চে যাবার জন্য যাত্রীদের স্থানান্তরিত করা হয়।তাদের কোম্পানির লঞ্চগুলোতে এ ধরনের দূর্ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি বলেও জানান

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্ব) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের সময় লঞ্চটি চাঁদপুর টার্মিনাল ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবার কথা।তার আগে যাত্রীরা যখন লঞ্চে উঠতে ছিল,আকস্মিক ইঞ্জিন জেনারেটরে আকস্মিকভাবে আগুন ধরে যায়। স্থানিয়ভাবে তা নিয়ন্ত্রন করতে না পারায় ফায়ার স্টেশনে খবর দেয়া হয়। লঞ্চটি চলন্ত অবস্থায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে প্রাণহানির আশংকার পাশাপাশি যাত্রীরা চরম বিড়ম্বনার শিকার হতেন। লঞ্চ স্টাফ ও যাত্রীদেরকে সেই পরিস্থিতি থেকে আল্লাহ রক্ষা করেছেন বলে যাত্রীরা জানায়।

লঞ্চের মাষ্টার মো. মামুনুর রশিদ জানান, ইঞ্জিনটি চালু করার পরপরই বিকট শব্দ হয়ে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে মারাত্মক দূর্ঘটনা এড়াতে তাৎক্ষনিক যাত্রীদের টার্মিনালে নামিয়ে দেয়া হয়। এরপর লঞ্চে থাকা ও আশপাশের লঞ্চের স্টাফ, নৌ-টার্মিনালে থাকা ব্যবসায়ীরা এসে আগুন নিভানোর চেষ্টা চালায়। ২০ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিসের ৩ ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।

মেসার্স রাকিব ওয়াটার ওয়েজের কোম্পানীর ম্যানেজার মো.ফরিদ আহম্মেদ জানান, অগ্নিকান্ডে আমাদের লঞ্চের ইঞ্জিন, কেবিন ও আসবাবপত্র সহ প্রায় ৮ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

খবর পেয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির, কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন কমান্ডার লে. এনায়েত উল্লাহ, বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

চাঁদপুর ফায়ার স্টেশনের উপ-পরিচালক রতন কুমার জানান, আমাদের ৩ ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান তদন্ত শেষে বলা যাবে।

(ইউএইচ/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮)