রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : প্রেমের টানে সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া একই মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণীর ছাত্রকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। ছেলে ও মেয়ে দু’জনেই অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় চেয়ারম্যান তাদেরকে বিয়ের জন্য সাবালক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলে তাদেরকে ছেড়ে দেন।

এদিকে প্রেমের কারণে ঘরছাড়া ওই মেয়েটির বিত্তশালী বাবা পার্শ্ববর্তী যাদবপুর গ্রামের এক নারীকে খুলনায় তুলে নিয়ে ৫দিন আটক রেখে তিন বন্ধুসহ পালাক্রমে ধর্ষণ মামলার আসামী। ওই মামলা থেকে তিনি বাচতে সব ধরনের তদ্বির তাগাদা করে ব্যর্থ হওয়ায় মেয়ের পরকীয়ার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারি সেই নারীর ভাইয়ের নামে পরিকল্পিত মামলা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

শ্যামনগর উপজেলার মাজাট গ্রামের শেখ আব্দুল মাজিদ জানান, তার নাতি উপজেলার ফুলতলা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মিলন গাজী যাদবপুর দাখিল মাদ্রাসার ১০ শ্রেণীর ছাত্র। একই মাদ্রাসার সপ্তম শেণীর ছাত্রীর বাড়ি তাদের বাড়ির পাশে। একই পাড়ায় বসবাসের সুবাদে ও মাদ্রাসায় যাওয়া ও আসার পথে মিলনের সঙ্গে ওই ছাত্রীর ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই জের ধরে বাবা বাড়িতে না থাকার সুযোগে বুধবার রাতে মায়ের চোখ ফাকি দিয়ে ওই ছাত্রী মিলনের সঙ্গে একটি ভ্যানে করে সোনার মোড় এলাকার মোস্তফার ইটভাটায় চলে যায়। রাতভর ওই ছাত্রীর সঙ্গে শারিরিক সম্পর্ক করে মিলন।

এক পর্যায়ে ভাটার লোকজন তাদেরকে ধরে ফেলে তাকে খবর দেয়। তিনি কয়েকজনকে নিয়ে বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে শ্যামনগর সদর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. জুহরুল হায়দার বাবুর কাছে নিয়ে যান। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদেরকে বিয়ে দিতে অস্বীকার করেন ওই চেয়ারম্যান। একপর্যায়ে মেয়ের মা ও চাচা এসে মিলনকে চলে যেতে বলে মেয়েটিকে নিয়ে থানায় যায়।

ফুলতলা গ্রামের সাহেব আলী ও রজব আলী জানান, মিলন গাজীর সঙ্গে ওই ছাত্রী পালিয়ে যেয়ে মোস্তফার ভাটায় শারিরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। তবে ওই মেয়ের চাচা তার ভাইকে বাচাতে যাদবপুরে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার ভিকটিমের ভাইকে জড়াতে মিলনকে ছেড়ে দেয়। বিষয়টি থানা জানতে পেরে তাদের দায়েরকৃত মামলা পুলিশ গ্রহণ করেনি। একপর্যায়ে মেয়েটিকে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যাদবপুরের ধর্ষিতার মামলা আপোষ করতে ব্যর্থ হয়ে মামলার প্রধান আসামী মেয়েকে দিয়ে ধর্ষনের নাটক সাজিয়ে ওই পরিবারকে চাপে রেখে মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে মামলা তুলে নিতে যাদবপুরের ধর্ষিতা ওই নারীর ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি পাচার ও অপহরণ মামলা দেওয়া হয়।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন জানান, এক ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে দু’জনকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮)