আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় যৌতুকের দাবিতে স্বামীর অকথ্য নির্যাতন সইতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে এখন বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামের মনির খলিফার মেয়ে নির্যাতিত সুমা আক্তার লিখিত অভিযোগে জানান, ৪ বছর আগে একই উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের চেংগুটিয়া গ্রামের মৃত আ. আজিজ ঘরামীর ছেলে মো. মিরাজুল ইসলামের সাথে সামাজিকভাবে নগদ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক ও স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন উপঢৌকন দিয়ে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরেই মিরাজুল ঢাকায় তার ব্যবসা সম্প্রসারণ ও যাতায়াতের জন্য একটি মোটর সাইকেল কিনতে ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করলে স্ত্রী সুমা তা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে সুমার উপর নেমে আসে নির্যাতনের চরম খড়গ।

টাকা দিতে অস্বীকার করার পর থেকে সুমাকে শাররীক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল স্বামী মিরাজুল ইসলাম। শ্বশুর পরিবার যৌতুকের টাকা দিতে অস¦ীকার করায় সম্প্রতি ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে ওড়না দিয়ে হাত পা বেঁধে মধ্য যুগীয় কায়দায় সুমাকে এলোপাথাড়ি মারধর করে মিরাজুল।

এসময় স্বামী মিরাজুল তার দাবীকৃত ২ লাখ টাকা তাকে না দিলে সুমাকে তালাক দিয়ে তার প্রেমিকা খাদিজাকে বিয়ে করবে বলেও শাশিয়ে দেয়। মারধরের পর সুমার এইসএসসি’র সার্টিফিটেসহ সকল সার্টিফিকেটের মুল কফি আটকে রেখে তাকে ডিভোর্স দিতে বলে, অন্যথায় সার্টিফিকেট ফেরত দেবে না বলে জানিয়ে দেয়।

নির্যাতিত সুমা আরও জানায়, তাদের বিয়ের পরে প্রতারণা করে মিরাজুল গৌরনদী উপজেলার রাজাপুর গ্রামে আরেকটি বিয়ে করে। প্রাণ বাঁচাতে সুমা বর্তমানে তার বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।

সুমার ডাকচিৎকার শুনে স্থানীয়রা সুমাকে উদ্ধার করে। স্বামীর মারধরের কারনে তার তিন মাসের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। ওই ঘটনার পর সুমা মিরাজুলের পরিবার থেকে পালিয়ে এসে আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়।

আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাবে শুক্রবার লিখিত অভিযোগে সুমা তার উপর অন্যায় অবিচারের জন্য বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, আইন সহায়তা কেন্দ্র ও প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮)