রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান গাজী হত্যা মামলায় বহুল আলোচিত মক্ষীরানী মাজিয়া আক্তার রুপাকে গ্রেফতার করেছে সিআউডি। বৃহষ্পতিবার রাত আটটার দিকে তাকে তার নিজ বাড়ি সাতক্ষীরা শহরতলীর দহকুলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত রুপা সোলায়মান হত্যার সঙ্গে নিজেকে জড়িত থাকার কখা স্বীকার করে আদালতে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর দিবাগত রাত ৮টার দিকে সন্নাসীর চকের সাহেব আলীর চায়ের দোকান থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে রাতের কোন এক সময়ে আশাশুনি উপজেলার কৈখালি গ্রামের ভবতোষ মণ্ডলের বাড়ির সামনে পানির ট্যাঙ্কির নীচে সোলায়মানকে জবাই করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সামিউল্লাহ গাজী পরদিন ওহাব আলী পেয়াদাসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আশাশুনি থানায় একটি হত্যা মামলা(জিআর-২১২/১৭) দায়ের করে। রাতেই আমিরুল ইসলাম নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি এ মামলায় ১০ জন উ”চ্চ আদালতের নির্দেশে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন লাভ করে। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তভার আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক নয়ন চৌধুরীর হাত থেকে সিআইডির (অর্গানাইজ ক্রাইম) এসআই হুমায়ুন কবীর কাছে স্থানান্তর করা হয়।

সন্নাসীর চক গ্রামের গোলাম মোস্তফা ঢালীর ছেলে আজাহারুল ইসলামকে খুলনা থেকে গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে দিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি করিয়ে গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় মামলার স্বাক্ষী আশাশুনি উপজেলার বসুখালি গ্রামের অমেদ আলীর ছেলে ও শোভনালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদককে ফারুক হোসেনকে গ্রেফতার করেন হুমায়ুন কবীর। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে আজাহারুল তার পরিচিত লোকদের সঙ্গে পরামর্শ করে ঘটনার সঙ্গে নিজে জড়িত নন সিআইডি কর্মকর্তার কাছে আত্মসমর্পন করেছেন বলে উল্লেখ করে। আজাহারুলের স্বীকারোক্তির বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় নিহতের পরিবারেরক্ষ থেকে তদন্তকারি কর্মকর্তা পরিবর্তনের জন্য গত ২০ মার্চ স্পেশাল ব্রাঞ্চ অব সিআইডি’র (অর্গানাইজ ক্রাইম) পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করা হয়।

সে অনুযায়ী চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল উপপরিদর্শক নিউটন কুমার দত্ত (অর্গানাইজ ক্রাইম) তদন্তভার পান। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহষ্পতিবার রাত ৮টার দিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মক্ষীরানী রুপা খাতুনকে তার বাড়ির এলাকা থেকে গ্রেফতার করে শুক্রবার সন্ধ্যায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি করানো হয়। জবানবন্দিতে সে আশাশুনির কৈখালিতে নিয়ে যেয়ে আজাহারুল কিভাবে সোলায়ানকে ইয়াবা ও জুসের মাধ্যমে নেশা জাতীয় জিনিস পান করিয়ে অবৈধ মেলামেলা করার পর জবাই করে হত্যা করে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নাম ও উল্লেখ করে রুপা।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নিউটন দত্ত জানান, আগামি ১৬ সেপ্টেম্বর আদালতে আজাহারুলের রিমাণ্ড শুনানীর জন দিন ধার্য আছে। রুপা খাতুনের জবানবন্দির পর এ হত্যাকাণ্ডের নতুন মোড় উন্মোচিত হতে চলেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে অনেক ুকছু বলা যাচ্ছে না।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৮)