কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি : বিয়ের প্রলোভনে ফুসলিয়ে নিয়ে রিক্সা গ্যারেজে আটক করে দুই দফা ধর্ষণের ঘটনার ৭ মাস অতিবাহিত হলেও ধর্ষক এখন ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেলো। ধর্ষক প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও রহস্যজনক কারনে থানা পুলিশক গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। 

ঘটনার পরদিন গাজীপুরের কাপাসিয়া থানায় ধর্ষিতার মাতা আইমন (৬০) বাদী হয়ে ধর্ষক ইসমাইলের (১৮) বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। ধর্ষক কাপাসিয়া গ্রামের রাহু’র পুত্র।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, উপজেলার কাপাসিয়া গ্রামের গায়েন বাড়ির বয়োবৃদ্ধা আইমন, তার স্বামী সুরুজ মিয়া পেশায় ফেরিওয়ালা। বিশেষ করে ওই গায়েন পাড়ার বেশির ভাগ লোকজনই ফেরি করে বেড়ায়। সারাদিন তারা বিভিন্ন এলাকায় ফেরি করে কাঁচের চুড়ি, ও প্রস্স্টিকের বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করে থাকেন। আইমনের স্বামী অসুস্থ্য থাকায় তাকে ছেলে-মেয়েদের বাড়িতে রেখে ব্যবসায়িক কারনে বেশির ভাগ সময়ই বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। এই সুযোগে বাড়ির পাশের মুদি দোকানী ও রিক্সা গ্যারেজের মালিক ইসমাইলের চোখ পড়ে তার কন্যা কিশোরীর (জায়দার )(১৬) উপর। বাড়িতে কেউ না থাকলে, এই সুযোগে এসে নানা কৌশলে তাকে ফুসলাইতে থাকে এবং প্রেম নিবেদন করে।

এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে নানা কথা বলতে থাকে। ঘটনার দিন চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী রাতে কিশোরী সদাই কিনার জন্য ইসমাইলের দোকানে গেলে কিশোরীকে ফুসলিয়ে টিনসেড দোকানের পিছনে নিয়ে যায়। বিয়ের ব্যাপারে কথা আছে বলে সময় কালক্ষেপন করতে থাকে। সে বাড়ি ফিরতে চাইলে তাকে আটকে রাখে।

এক পর্যায়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে দুই হাত ও মুখ গামছা দিয়ে বেধে জোরপূর্বক দুই দফা ধর্ষণ করে। সে সময় কিশোরী (জায়দা) জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং বহু খোঁজাখোজি করে পরদিন সকাল ১০টার দিকে বাড়ির লোকজন ইসমাইলের দোকানের ভিতরে তার গোঙ্গানির শব্দ শুনতে পায়। টের পেয়ে অবস্থা বেগতিক দেখে ধর্ষক পালিয়ে যায়। কিশোরীকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা এবং ডাক্তারী পরীক্ষা করা হয়।

ঘটনার ৭ মাস অতিবাহিত হলেও থানা পুলিশ কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। ধর্ষক প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও থানা পুলিশ গ্রেফতার করেনি বলে বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি থানার ওসি মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিককে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেন।

এদিকে ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে ধর্ষক ও তার পরিবার প্রতিনিয়ত হুমকী দিচ্ছে। ধর্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে ধর্ষিতার পরিবার ফেরি করতেও বের হতে পারছেনা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোঃ শফিকুল ইসলাম- ২ কে তার মুঠোফোনে বারবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।এ ব্যাপারে কাপাসিয়া থানার ওসি জানান, রিপোর্ট এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(এসকেডি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৮)