কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : রবীন্দ্র ভক্তদের অনেক আন্দোলন সংগ্রাম, দেন দরবার সর্বপরি জাতীয় সংসদে আলোচনা সমালোচনার পর অবশেষে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুষ্টিয়া কুমারখালির শিলাইদহ কুঠিবাড়ি তার ঐতিহ্যের রঙ ফিরে পেল।

আগামী ২২ শ্রাবণ কবি গুরুর তিরোধান দিবসকে সামনে রেখে পুরোদমে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যের মেরুন রঙে রাঙানোর কাজ। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে হঠাৎ করে কুঠিবাড়িকে শতবর্ষী মেরুন রঙের বদলে অফহোয়াইট রং করা হয়। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রবীন্দ্র ভক্তসহ দেশ বিদেশ থেকে আসা হাজারো দর্শনার্থী। রঙ পরিবর্তনের পর থেকে রবীন্দ্র ভক্তসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয় পূর্বের রঙে ফিরে আসার বিষয়টি।
দশম জাতীয় সংসদের পধথম অধিবেশনে কুষ্টিয়া-৪ কুমারখালি-খোকসা আসনের সংসদ সদস্য আবদুর রউফ সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে শিলাইদহ কুঠিবাড়িকে ঐতিহ্যের রঙে ফিরে আনার দাবি জানান।
শিলাইদহ কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান মুখলেছুর রহমান ভুঁইয়া জানান, কয়েকদিন আগে থেকে পত্নততত্ত্ব বিভাগের উদ্যেগে শিলাইদহ কুঠিবাড়িকে ঐতিহ্যের মেরুন রঙে রাঙানোর কাজ শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৮৯০ খিধষ্টাব্দের ২৫ নভেম্বর রবীন্দধনাথ ঠাকুর সদলবলে শিলাইদহে আসেন। এসময় তাঁর সাথে ছিল স্ত্রী মৃণালিনী দেবী, কন্যা বেলা, পুত্র রথীন্দ্রনাথ, মৃণালিনী দেবীর সহচরী ও বলেন্দ্রনাথ। কবিগুরু দীর্ঘ ১০ বছর একটানা কুমারখালির শিলাইদহে কাটিয়েছেন। ৩২ বিঘা জমি নিয়ে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আঙিনা।

আড়াইতলা এ বাড়িটিতে রয়েছে ১৭টি কক্ষ। বাড়িটির কক্ষ ও বারান্দা জুড়ে প্রদর্শনীর জন্য রয়েছে কবির ব্যবহৃত ১টি পাল১⁄৪, লেখার টেবিল, ইজি চেয়ার, নদীতে চলাচলের দুটি বোট ‘চঞ্চল’-‘চপলা’, ৬ বেহারা ও ৮ বেহারার ২টি পালকি, লোহার সিন্দুক ১টি, খাজনা আদায়ের টেবিল ১টি, রোলার ১টি, আটকোনা টেবিল ১টি, গদি চেয়ার ২টি, সোফা ২টি, আলনা ১টি, কাঠের আলমারী ৪টি, ফাইল কেবিনেট ১টি ঘাষকাটা যন্ত্র, পানি শোধন যন্ত্র ১টি, বিভিন্ন সময়ে কবিকে ঘিরে তোলা আলোকচিত্র, কবির নিজের আকা ছবি ইত্যাদি। গত বছর ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী শিলাইদহ কুঠিবাড়ি পরিদর্শনে এসে কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়িত ২১টি আলোকচিত্র উপহার দেন।
(কেকে/এএস/জুলাই ১৬, ২০১৪)