শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মৌলভীর ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’বছর হতে দু’জন শিক্ষক দিয়েই চলছে ৬টি শ্রেণির ২’শ ৬৫ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান । এতে  চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম।

সরেজমিনে গিয়ে মিলেছে এমনি চিত্র। ৫ পদের এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক এবং একজন সহকারী শিক্ষক কর্মরত আছেন। ইতিপূর্বে ৪ জন শিক্ষক কমর্মত থাকলেও দায়িত্বে অবহেলা স্বেচ্ছাচারিতা ও অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ায় তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। শিক্ষকদের দোষের ঘানি টানটে হচ্ছে,সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ মার্চ/১৭ইং স্মারক নং- জেশ্রশিঅ/দিনাজ/শিঃবদলি/৮০৩ ও স্মারক নং-উশিঅ/পার্বতী/দিনাজ/বদলি২০১৭/৬৪/১০, তাং- ১৯/০৩/১৭ইং আদেশ মূলে অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ হাফিজুর রহমানকে উপজেলার একই ওয়ার্ডের দলাইকোটা সবুজ নব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শিক্ষিকা রেবেকা খানমকে পার্শবর্তী আনন্দ বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রশাসনিক বদলি করা হয়।

পরবর্তীতে কুড়িগ্রাম জেলা হতে ১৮/০৪/১৭ইং তারিখে একজন প্যানেল শিক্ষিকা শেফালী খাতুনকে নিয়োগ দেয়া হয়। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ২১/০৯/১৭ইং তারিখে কুড়িগ্রামের সকল প্যানেল শিক্ষককে নিজ জেলায় প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এর পর হতে দু’জন শিক্ষক দিয়ে ২’শ ৬৫ জন শিক্ষার্থীর প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান চলমান আছে। প্রধান শিক্ষককে প্রায় সময় প্রশাসনিক কাজে উপজেলা সদরে যাতায়াতের ফলে একজন শিক্ষককে গোটা বিদ্যালয় সামলাতে হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক খন্দকার হাবিবুর রহমান বলেন, প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক স্বল্পতা যা ইতোমধ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বারংবার অবহিত করা হয়েছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অফিসিয়াল কাজ, উপবৃত্তি, শিশু জরিপ, স্কুল ফিডিং কর্মসূচীর বিস্কুটের হিসাব প্রতিদিন হালফিল সহ ৬ টি শেণির পাঠদান সামলানো খুব কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

সহকারী শিক্ষা অফিসার খয়ের পুকুর ক্লাষ্টার আল-সিরাজ জানান, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা অনেক। কিন্তু মাত্র দু’জন শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয় চালানো অসম্ভব। শিক্ষক সংকট নিরসনে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকটের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত আছি, তবে নতুন শিক্ষক নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত সমস্যা সমাধান জটিল।

দিনাজপুর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আহসান হাবিব জানান, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক স্বল্পতা কর্তৃপক্ষের নজরে আছে। তবে সংশ্লিষ্ট প্রধাান শিক্ষককে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত ভাবে জানাতে হবে। সেই প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

সচেতন অভিভাবক মহল মনে করছেন, পার্শবর্তী যে সমস্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকের হার বেশি রয়েছে, সেখান থেকে শিক্ষক সমন্বয় করে শিক্ষক স্বল্পতা নিরসনে কর্তৃপক্ষকে একান্ত উদ্যগ নেয়া প্রয়োজন।

(এসএএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮)