কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের কাপাসিয়া থানা পুলিশ গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার ধোলাই পাড় থেকে অপহরণ হবার ১১দিন পর কালীগঞ্জ থেকে শাহাদত হোসেন সোহাগ (৩২) নামের এক পরিবহন ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ মানিক মিয়া (৫৫) নামের অপহরণকারী দলের এককে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ জানায় , পটুয়াখালীর হালিশাখালি এলাকার মজিবুর রহমানের পুত্র পরিবহন ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন সোহাগ তার সৎ ভাই রেদোয়ানকে নিয়ে গাড়ির যন্ত্রাংশ কিনতে গত ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসেন। সন্ধ্যায় ঢাকার ধোলাইপাড় এলাকা থেকে একটি মাইক্রোবাস করে তাকে অপহরণ করে। সে সময় তার সঙ্গে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ছিল। এ ঘটনার পর শাহাদত হোসেন সোহাগ নিখোঁজ হয়েছেন এ মর্মে যাত্রাবাড়ি থানায় তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার একটি সাধারণ ডায়রী করেন (জিডি) করেন।

পরিবারের লোকজন সোহাগকে ফিরে পাওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় খোজাঁখুজি করতে থাকে। হঠাৎ তার স্ত্রী অজ্ঞাত এক ফোন পায়। মোবাইল ফোনে তার স্বামীকে পেতে হলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে বলে জানায় এবং এ বিষয়টি থানা পুলিশকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। কিন্তু অপহরণকারীরা তাকে একেক সময় একেক ঠিকানা দেয়। পরে আবার সোহাগের স্ত্রী সেলিনাকে গত রবিবার মানিক মিয়া নামে এক ব্যক্তি ফোন দেয়। ফোনে তাকে আজ (সোমবার)কাপাসিয়ার চাঁদপুর বাজারে ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলেন।

সেলিনা ঘটনাটি কাপাসিয়া থানা পুলিশেকে জানালে কাপাসিয়া থানার ওসি আবুবকর সিদ্দিক এবং ওসি (অপারেশন) মনিরুজ্জামান খানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ফাঁদ পেতে টাকা দিয়ে সেলিনাকে অপহরণকারীদের নিকট পাঠায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে মানিক মিয়া নামে একজনকে ধরে ফেলে। তার স্বীকারোক্তিতে পুলিশ মানিক মিয়ার পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার ডেমরা গ্রামের তালাবদ্ধ এক ঘর থেকে হাত-পা বাধাঁ অবস্থায় সোহাগকে উদ্ধার করে।

সোহাগ জানায়, টাকার জন্য অপহরণকারীরা তাকে শারিরীক ভাবে অনেক নির্যাতন করেছেন। তাকে ঠিকমত খেতেও দেননি। এ ঘটনায় তার সৎ ভাইও জড়িত রয়েছেন বলে তিনি জানান।

থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, এ ঘটনায় অপহৃত সোহাগের স্ত্রী সেলিনা বাদী হয়ে সোমবার রাতেই কাপাসিয়া থানায় ৭ জনকে আসামী করে অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন।

অপহরণকারীরা হলো- মানিক মিয়া (৫০), কাইয়ূম (৪৫), ফারুক (৩০), রেদোয়ান (২৮), কাইয়ূম (২৫), মিনহাজ (১৮), মানছুরা (৩০)সহ ২/৩ জন অজ্ঞাতনামা। অপহরণের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে। এদিকে মানিক মিয়ার পরিবার জানায়, দীর্ঘদিন আগে বিদেশে লোক পাঠানোর বিষয়ে সোহাগের সাথে কিছু টাকার লেনদেন ছিল। লেনদেনের বিষয়টি অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮)