আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে বার বার চিঠি চালাচালি আর কাগজে কলমে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলেও হাসপাতালের অসাধু চিকিৎসকদের ম্যানেজ করে হাসপাতালের সামনে সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের নাকের ডগায় রোগীদের সাথে প্রতারণা করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা একাধিক ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের মধ্যে সোমবার সকালে দু’টি ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার অবশেষে বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধরা।

তবে ওই বন্ধ সেন্টার অজ্ঞাত কারনে গতকাল মঙ্গলবার খোলা দেখা যায়। চিকিৎসকেরা অবৈধ ও ভুয়া টেকনোলজিস্ট এর কথা জানলেও নিজেরা অধিক লাভবান হতে সেখানে এক রোগীর ইসিজি পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করেন ডা. জ্যোতি রানী বিশ্বাস।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ৫০ শয্যার হাসপাতালের সামনে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা একাধিক ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের মধ্যে সোমবার সকালে সন্যামত ডায়গনিস্টিক সেন্টার ও সিকদার ডায়গনিস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয় স্থানীয় বিক্ষুব্ধরা।

বিক্ষুব্ধরা জানান, ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার দু’টি চালু হবার পর থেকে সার্টিফিকেটধারী কোন প্যাথলজিষ্ট না থাকায় এবং হাসপাতালের চিকিৎসকদের ম্যানেজ করে অদক্ষ কর্মচারীর মাধ্যমে রোগীদের পরীক্ষা নিরীক্ষার নামে প্রতারনা করে আসছিলো। হাসপাতালে চিকিৎসকেরাও রোগীদের সেখানে পরীক্ষার জন্য পাঠাচ্ছেন। ফলে অদক্ষ টেকনিশিয়ানদের ভুল রিপোর্ট প্রদানের কারণে স্থানীয় শামীম গাজী, রাকিব সরদারসহ অনেক রোগীদের সাথে তার রিপোর্টের প্রতারনা ধরা পরে।

বিক্ষুব্ধ শামীম গাজী জানান, সন্যামত ডায়গনিস্টিক সেন্টারের মালিক নজরুল সন্যামত এক সময় হাসপাতালের সামনে চা বিক্রি করতেন। পরে নিজে একটি ঔষধের দোকান দিয়ে বসে। কিছুদিন পর ঔষধের দোকানের পিছনে একটি প্যাথলজি খুলে নিজেই প্যাথলজিস্ট হিসেবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয়া শুরু করে।

বরিশাল জেলা সিভিল সার্জনসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা প্যাথলজি পরিদর্শনে আসার আগেই তারা খবর পেয়ে প্যাথলজিতে তালা মেরে পালিয়ে যেত। এদিকে সোমবার স্থানীয়রা দু’টি প্যাথলজি বন্ধ করে দিলে ও গতকাল মঙ্গলবার ডা. জ্যোতি রানী বিশ্বাস এক রোগীকে সেই বন্ধ সন্যামত ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করেন। সেখানে অদক্ষ আনাড়ী মালিক কাম টেকনিশিয়ান নজরুল সন্যামত রোগীর ইসিজি করে রিপোর্ট দেয়।

এ ব্যাপারে হাসপাতাল প্রধান ইউএইচএএফপিও ডা. আলতাফ হোসেন বলেন, আগৈলঝাড়ার গড়ে ওঠা সকল ক্লিনিক ও ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার অবৈধ। অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, যে তার হাত পা বাধা। অবৈধ ডায়াগনিস্টিক সেন্টার বন্ধের জন্য বার বার ইউএনও ও থানার ওসিকে বলা হলেও তারা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮)