সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের গগডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র জনি হত্যার আসল রহস্য উদঘাটনে অবশেষে মঙ্গলবার জনির মা মেহেরা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।

এর আগে পুলিশ একই গ্রামের সবুজ মিয়া, বাবুল, বাচ্চু, মাজু মুন্সি, রইছ উদ্দিন ও সাইফ উদ্দিনকে আটক করে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ বাবুল, বাচ্চু, মাজু মুন্সি রইছ উদ্দিন ও সাইফ উদ্দিনকে স্থানীয় লোকদের জিম্মায় পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের শর্তে ছেড়ে দিলেও সবুজ মিয়াকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে আদালতের বিচারক সবুজের জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

চলতি বছরের গত ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেল থেকে গগডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র জনি (১১) গগডা আটকান্দিয়া গ্রামের নিজ বাড়িথেকে নিখোঁজ হয়। এর পর খুঁজাখুজি করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিলনা। ৯ সেপ্টেম্বর রোববার সকালে জনির বড় বোন রত্না আক্তার বাড়ির সামনে আব্দুল বারেকের পুকুরে একটি চটের বস্তা ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায়। পরে বাড়ির অন্যান্য লোকজন এসে বস্তাটি কিনারায় আনার জন্য টান দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বস্তার মুখ খুলে একটি মানুষের হাত বেড়িয়ে আসে। এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ জনির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় জনির বাবা আব্দুস সুবহান বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি বলেন, বাবুল, বাচ্চু মিয়া, মাজু মুন্সি, রইছ উদ্দিন ও সাইফ উদ্দিনের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল। এর জের ধরেই তারা জনিকে হত্যা করতে পারে বলে তার সন্দেহ ছিল।

মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা কেন্দুয়া থানা পুলিশের এস.আই সামেদুল হক বলেন, এ পর্যন্ত যাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রধরেই স্কুল ছাত্র জনির মা মেহেরা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। আশাকরি জিজ্ঞাসাবাদের পর তার কাছ থেকে জনি হত্যার গুরুত্বপূর্ন তথ্য বেড়িয়ে আসবে।

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া বলেন, বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এখন সন্ধেহের তীর জনির মায়ের দিকেই। এজন্যেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মেহেরাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই স্কুল ছাত্র জনি হত্যার প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছি। একটি সূত্রে জানা যায় জনির মা মেহেরা আক্তার ও সবুজ মিয়া পরিকল্পিত ভাবে জনিকে হত্যা করে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে রাখে।

এ ব্যপারে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইমারত হোসেন গাজী বলেন, সাম্ভাব্য সব দিক পর্যালোচনা করেই জনির মা মেহেরাকে জিজ্ঞাসা বাদের জন্য আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে মামলার বাদী জনির বাবা আব্দুস সুবহানকেও তার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আনা হয়েছে।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮)