রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত আলী সিকদার দুটি হত্যা মামলা মাথায় নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। হেকমত আলী সিকদার এলাকায় প্রভাবশালী বিধায় তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার দৃষ্টতা দেখালে তার সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে তাদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করে।

উপজেলার বেতুয়া পাড়া গ্রামের এডভোকেট ফরহাদ আলী চেয়ারম্যানের অনিয়ম, দুর্নীতি, শালিশের নামে চাঁদা আদায় সহ বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান তার প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়।

বিভিন্ন সময়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হলেও গত ২১ জুলাই তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে এডভোকেট ফরহাদ আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে। প্রভাবশালী হেকমত সিকদারের দাপটে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীকে বাদ রেখে তরিঘরি করে থানা পুলিশ একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে টাঙ্গাইল জেলা এডভোকেট বার সমিতি ফরহাদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করায় নিহতের বাবা হাফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে চেয়ারম্যানকে আসামি করে গত ৩০ আগস্ট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঘাটাইল থানা আমলী আদালতে দঃ বিঃ ৩০২/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং সিআর ৩৮৯/২০১৮)।

এছাড়া গত ইউপি নির্বাচনে গুপ্ত বৃন্দাবন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করার সময় এলাকাবাসী বাধা দিলে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী তাদের উপর গুলি ছুড়ে। ওই সময় মালেক নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। অপর ২’জন ফারুক ও জলিল গুলিবিদ্ধ হয়ে এখনো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

নিহতের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন বাদী হয়ে টাঙ্গাইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঘাটাইল থানা আমলী আদালতে হেকমত সিকদারকে প্রধান আসামী করে একটি হত্যা মামলা (সি আর- ১৪২/২০১৮) দায়ের করে। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা থাকলেও প্রশাসনের রহস্যজনক ভূমিকার কারণে তিনি প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

নিহত ফরহাদ আলীর বাবা হাফিজ উদ্দিন জানান, হেকমত সিকদার এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তার ওই সব অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় আমার ছেলে ফরহাদ আলীকে হেকমত সিকদার পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে।

এ বিষয়ে ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মাকসুদুল আলম জানান, নির্বাচনকালীন সময়ের মামলার বিষয়ে তিনি অবগত নন।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত আলী সিকদার জানান, একটি মহল আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাসানোর চেষ্টা করছে।

(আরকেপি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮)