নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ কর্তৃক জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে টিচিং ষ্টাফ লিস্টে  রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে উপেক্ষা করে আত্তীকৃত একজন প্রভাষককে ১নং ক্রমিকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কানু কুমার ঘোষ ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। 

এ ঘটনার পর অধ্যক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে উক্ত বিভাগীয় প্রধানকে লাঞ্ছিত করে তার কাছ থেকে জোর পূর্বক মুচলেকা নিয়েছেন। এ ঘটনায় কলেজে কর্মরত প্রভাষক, কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ১১ এপ্রিল ২০১৮ তারিখের পত্র মোতাবেক প্রভাষক কানু কুমার ঘোষকে (৩৫ তম বিসিএস) নড়াইলের সরকারি মহিলা কলেজ থেকে লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজে বদলী করা হয়। ২০০০ সালের বিধি অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে উক্ত প্রভাষক দায়িত্ব গ্রহণ করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু বিধি বাম! কলেজের নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে গত ১৩ জুন প্রফেসর ড. মোঃ মহব্বত আলী যোগদান করার পর জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে উক্ত বিভাগের প্রভাষক(আত্তীকৃত) মোঃ খায়রুজ্জামানকে টিচিং ষ্টাফ লিস্টে ১নং ক্রমিকে রাখেন।

এ ঘটনায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কানু কুমার ঘোষ বিষয়টি অধ্যক্ষকে অবহিত করলেও অধ্যক্ষ তাতে কর্ণপাত করেন নাই। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে উক্ত অধ্যক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রভাষক কানু কুমার ঘোষকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এরপর প্রভাষক কানু কুমার ঘোষ একাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে অধ্যক্ষকে ফের বিষয়টি অবহিত করেন। এরপরেও অধ্যক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই। উপায়ান্ত না দেখে প্রভাষক কানু কুমার ঘোষ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দাখিল করেন।

উক্ত অধিদপ্তরের কলেজ শাখা-২ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি পরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসেন গত ৫ সেপ্টেম্বর কলেজ অধ্যক্ষকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সৃষ্ট বিষয়টি সমাধানের জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ সহকারি পরিচালক দেলোয়ার হোসেনকে সৃষ্ঠ সমস্যার সমাধান করবেন বলে মিথ্যা আশ্বাস দেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর কলেজের অধ্যক্ষ তার ব্যক্তিগত কক্ষে প্রভাষক কানু কুমার ঘোষকে শ্রেণি কক্ষ থেকে ডেকে আনেন এবং তার অনুগত কতিপয় প্রভাষকের সামনে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় অধ্যক্ষের অনুগত প্রভাষকরাও(আত্তীকৃত) কানু কুমার ঘোষের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অশালীন মন্তব্য করেন।

কলেজের অধ্যক্ষ এখানেই থেমে থাকেন নাই, উক্ত বিভাগের অপর দুজন প্রভাষককে প্রভাবিত করে বিভাগীয় প্রধান কানু কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন এবং নীতি বর্হিভূত ভাবে জোর পূর্বক মুচলেকা আদায় করেন। অধ্যক্ষের নির্দেশে প্রভাষক কানু কুমার ঘোষকে টিচিং ষ্টাফ লিস্ট তালিকায় ১নং ক্রমিকে রাখা হয়। এরপরেও কলেজের অধ্যক্ষ নীতি বর্হিভূত ভাবে অপর একজন প্রভাষক মোঃ ইমতিয়াজ হোসেন(৩৫তম বিসিএস) কে ২নং এর পরিবর্তে ৩নং ক্রমিকে রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভূক্তভোগী প্রভাষক কানু কুমার ঘোষ বলেন, ‘ আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে অধ্যক্ষ সহ তার অনুগত প্রভাষকরা একতরফা ভাবে আমাকে লাঞ্ছিত ও হেয় করেছেন। আমি এ ঘটনার যথাযথ বিচার চাই।

এ ব্যাপারে বুধবার কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.মোঃ মহব্বত আলীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন(০১৭১৮-৫০৪৭৩৩) সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।

(আরএম/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮)