সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনা কেন্দুয়া পৌরসভার প্রথম মেয়র প্রয়াত আব্দুল হক ভূঞার ছোট ছেলে রাতুল হাসান বাবুর সঙ্গে প্রেম করে রেজিষ্ট্রী কাবিন মূলে বিয়ের এক মাস নয় দিন পর ৩৭ তম বিসিএসে উত্তীর্ণ তাসলিমা সুলতানা সিনথিয়াকে অপহরণের অভিযোগ এনে তার মা রাজিয়া সুলতানা বুধবার কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

বৃহস্পতিবার সকালে কণ্যা সিনথিয়াকে উদ্ধারের দাবীতে কেন্দুয়া থানার সামনে অবস্থান নেয় সিনথিয়ার মা রাজিয়া সুলতানা ও বাবা সুলতান আহমেদ।

সিনথিয়ার মা বাবা জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেন্দুয়া আরামবাগ মহল্লার বাসা থেকে কিছু দুষ্কৃতিকারী লোক তার কণ্যাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করতে পারেনি।

মামলায় কেন্দুয়া পৌরসভার প্রথম মেয়র প্রয়াত আব্দুল হক ভূঞার ছোট ছেলে ও বর্তমান পৌর মেয়র মো: আসাদুল হক ভূঞার ভাতিজা রাতুল হাসান বাবু ও অপর ভাতিজা সাফিম, ভাগিনা জুনায়েদ, পুলক ও কাউরাট গ্রামের মোজাম্মেল হকের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১৫/২০ জনকে আসামী করা হয়েছে।

সিনথিয়া কেন্দুয়া পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও কাউন্সিলর আশরাফ উদ্দিন ভূঞার ভাগিনী। সিনথিয়ার বাবা উপজেলা উশু এসোসিয়েশনের সভাপতি সুলতান আহমেদ।

মামলার এজাহারে বলা হয় আসামীরা একে অপরের পরামর্শক্রমে অস্ত্রের মুখে রাতুল হাসান বাবু সিনথিয়াকে সি.এন.জিতে তুলে নিয়ে যায়। এদিকে প্রাপ্ত বয়ষ্ক ছেলেমেয়ের প্রেম করে বিয়ের পর অপহরনের নাটক সাজিয়ে মামলা দিয়ে উদ্ধারে থানায় অবস্থান নেয়ার ঘটনায় জনমনে তীব্র আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে।

জানতে চাইলে কেন্দুয়া পৌরসভার মেয়র মোঃ আসাদুল হক ভূঞা বৃহস্পতিবার বলেন, এটি অপহরনের কোন ঘটনা নয়। ৩৭ তম বি.সি.এসে উত্তীর্ন তাসলিমা সুলতানা সিনথিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই রাতুল হাসান বাবুর প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। প্রেম সম্পর্কের কারণেই প্রাপ্ত বয়ষ্ক ছেলে মেয়ে দুজনে মিলে চলতি বছরের গত ১১ আগস্ট ৩৬১ এলিফ্যান্ট রোড নিউ মার্কেট ঢাকা-১২০৫ কাজী মো: বিল্লাল হোছাইনের অফিসে রেজিষ্ট্রী কাবিন মূলে ৩ লাখ টাকার দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর সিনথিয়া তার বাবার বাড়িতে যায়। এর পর সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সিনথিয়াকে বধূ হিসেবে বরণ করার জন্য সিনথিয়ার মামা আশরাফ উদ্দিন ভূঞার সাথে আমাদের আলাপ আলোচনা চলছিল। এতে তার মা বাবা ও মামার পক্ষ থেকে তেমন কোন সারা না পেয়ে সিনথিয়া নিজেই রাতুল হাসান বাবুকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যায়।

তিনি বলেন, তাদের স্বাধীন মতামতের উপর আমাদের সমর্থন দেয়াই উচিত বলে আমি মনে করি। এ ব্যাপারে সিনথিয়ার মামা আশরাফ উদ্দিন ভূঞার সঙ্গে মোবাইল ফোনে পৌরসভার মেয়র আসাদুল হক ভূঞা আপনার নিকট সামাজিক ভাবে সিনথিয়াকে বধূ হিসেবে বরণ করে নেয়ার কোন প্রস্থাব দিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মেয়র আমাকে প্রস্থাব দিলেও আমি সঙ্গে সঙ্গেই তা প্রত্যাখান করে দিয়েছি। এখন আমাদের একটাই দাবী সিনথিয়া উদ্ধার হলেই সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটবে।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮)