স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীতে প্রায় একমাস স্থিতিশীল থাকার পর বাড়তে শুরু করেছে মুরগির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে বয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০-২০ টাকা। তবে কিছুটা কমেছে দেশি পেঁয়াজের দাম। এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে বেশিরভাগ সবজির দাম।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ, হাজীপাড়া, খিলগাঁও, সেগুনবাগিচা এবং শান্তিনগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বাজার ঘুরে জানা গেছে, বয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা কেজি। এছাড়া ডিমপাড়া সাদা মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪০-১৫০ টাকা কেজি।

বেগুনবাগিচা বাজারে গত সপ্তাহে বয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা কেজি। সপ্তাহর ব্যবধানে বাজারটিতে আজ বয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। বয়লারের পাশাপাশি দাম বেড়েছে ডিমপাড়া সাদা মুরগিরও। গত সপ্তাহে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সাদা মুরগি আজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি।

তবে কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে মালিবাগ হাজীপাড়া বৌ-বাজারে। গত সপ্তাহে বাজারটিতে বয়লার মুরগির কেজি ছিল ১২০ টাকা, যা সপ্তাহে ব্যবধানে বেড়ে আজ শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি। আর ডিমপাড়া সাদা মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি।

মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসাবে সেগুনবাগিচার ব্যবসায়ী মো. মিজান বলেন, কোরবানির ঈদের পর থেকেই মুরগির দাম কম ছিল। এখন প্রায় সব বাসায় কোরবানির মাংস শেষ হয়ে এসেছে। ফলে বেড়েছে মুরগির চাহিদা। আর চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়েছে।

হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. রইস বলেন, এখন আর কারও বাসার ফ্রিজে মাংস তেমন একটা মজুদ নেই। ফলে বাজার থেকেই এখন মাংস কিনতে হচ্ছে। গরুর মাংস ৫০০ টাকার নীচে মিলছে না। যে কারণে এক শ্রেণির মানুষ বয়লার মুরগির দিকেই ঝুঁকছে। এর ফলে মুরগির দামও বেড়েছে।

এ ব্যবসায়ী আরও বলেন, গত সপ্তাহেও বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করেছি ১২০ টাকা। কিন্তু সে সময় বিক্রি খুব একটা ছিল না। এখন দাম বেড়ে ১৩০ টাকা হলেও বিক্রি গত সপ্তাহের তুলনায় অনেক বেশি।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম বাড়লেও কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে শান্তিনগর বাজারে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজের দাম কমে আজ (শুক্রবার) বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। তবে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ আগের সপ্তাহের মতোই ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা খিলগাঁও অঞ্চলে গত সপ্তাহে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজের দাম কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজি। আর ভারতীয় পেঁয়াজ আগের সপ্তাহের মতো ২৫-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম কমার কারণ হিসেবে শান্তিনগরের ব্যবসায়ী মো. জুয়েল বলেন, আড়ৎ থেকে আমরা এখন কম দামে পেঁয়াজ আনতে পারছি, যে কারণে বিক্রিও করছি কম দামে। আমাদের ধারণা, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমার কারণে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে।

অন্যদিকে বাজারে মুরগি ও পেঁয়াজের দাম উঠা-নামা করলেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে বেশিরভাগ সবজির দাম। মাসের অধিক সময় ধরে একশ’ টাকার ওপরে কেজি দরে বিক্রি হওয়া শিম, টমেটো ও গাজরের দাম এখনও চড়া।

গত কয়েক সপ্তাহের মতো বাজারের এখনও সব থেকে দামের সবজি শিম। এমনকি গত সপ্তাহের তুলনায় এ সবজিটির দাম কিছুটা বেড়েছে। বাজার ও মানভেদে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। বাজারের আরেক দামি সবজি পাকা টমেটো। গত সপ্তাহের মতো বাজার ভেদে ৭০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটোর। গাজরও আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি।

তবে দাম বেড়েছে শীতের আগাম সবজি ফুলকপির। ছোট আকারের প্রতিপিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩০-৩৫ টাকা। তবে পাতাকপি আগের সপ্তাহের মতো ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হওয়া সবজির মধ্যে রয়েছে- বেগুন, উস্তা, বরবটি, কাকরল, করলা, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, ঢেঁড়স, লাউ। তবে বাজারভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা কেজি এবং উস্তার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা।

বরবটি ৫০-৬০ টাকা, চিচিংগা, পটল, ঝিঙা, ধুনদল, কাকরল বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি। পেঁপে আগের মতো ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে করলা। ঢেঁড়স পাওয়া যাচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজির মধ্যে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮)