স্টাফ রিপোর্টার : আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগবিরোধী বৃহত্তর জোট গঠনের অংশ হিসেবে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে বিএনপির যোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি আগের দিনও।

বহুল আলোচিত এই সমাবেশের ২৪ ঘণ্টা আগেও বিএনপি সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, সেখানে তারা যাবে কি না। যদিও বিএনপি এই ঐক্যের জন্য বেশ কয়েক মাস ধরেই চেষ্টা করে যাচ্ছে।

শনিবার গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে গণফোরাম নেতা কামাল হোসেনের উদ্যোগে এই ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশ হবে। আর আগের দিন সকালে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংবাদ সম্মেলনে এই সমাবেশে যোগ দেয়া নিয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট হয়নি।

বিএনপি সেই সমাবেশে যাবে কি না- এমন প্রশ্ন ছিল ফখরুলের কাছে। তিনি জবাব দেন, ‘এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে জানাব।’

বিএনপি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তার মোর্চা ২০ দলীয় জোটের বাইরে থাকা বিভিন্ন দলের সঙ্গে ঐক্য করতে চায়। এর মধ্যে ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম যেমন আছে, তেমনি বিএনপি থেকে বের হয়ে দল গঠন করা একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন দল ও সংগঠনের মোর্চা যুক্তফ্রন্টও আছে।

এরই মধ্যে কামাল হোসেন ও যুক্তফ্রন্টের মধ্যে ঐক্য হয়েছে। আর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে যুক্তফ্রন্ট যোগ দেবে বলে জানানো হয়েছে।

যদিও গণফোরাম এবং যুক্তফ্রন্টের ঐক্যের ঘোষণা দেয়ার সংবাদ সম্মেলনে যুক্তফ্রন্টের প্রধান নেতা বি চৌধুরীর অনুপস্থিতিতে নানা প্রশ্ন আছে। জানানো হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে আসার পথে সাবেক রাষ্ট্রপতি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবে তার কী হয়েছে, সেটি এক সপ্তাহেও জানানো হয়নি।

আবার সংবাদ সম্মেলনের পর খুলনার সমাবেশেও যাননি বি চৌধুরী, তার ছেলে মাহী বি চৌধুরী বা বিকল্প ধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান। বি. চৌধুরীর বাসায় যাওয়ার কথা হলেও কামাল হোসেন আবার অসুস্থতার কথা বলে যাননি। এ নিয়ে দুই শক্তির মধ্যে কোনো মান অভিমান হয়েছে কি না- সেই বিষয়টিও আছে আলোচনায়।

এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় বিএনপিকে যুক্ত করতে প্রকাশ্য রাজনৈতিক শক্তি ছাড়াও বিভিন্ন মহলের চেষ্টা আছে। আর ড. কামাল হোসেনকে বিএনপি নেতা মেনে ঐক্য করতে প্রস্তুত, এমন কথাও ছড়ানো হচ্ছে।

আবার ঐক্যের আলোচনায় যুক্তফ্রন্ট নেতারা নানা শর্ত আর বক্তব্য দিয়ে বিএনপি নেতাদেরকে সন্দেহপরায়ন করে তুলেছেন। বিশেষ করে ১৫০টি আসন ও দুই বছর প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেয়ার মতো শর্ত বাড়াবাড়ি মনে হচ্ছে এবং এ কারণে ঐক্যের বিষয়টি ঝুলে আছে।

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার এই সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথমে অনুমতি দেয়া হয়নি। মহানগর নাট্যমঞ্চে এই সমাবেশ করতে বলার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই বরাদ্দ দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার বাম জোটের নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটারও নিন্দা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। সেই সঙ্গে সব দলের সঙ্গে কথা বলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ বের করতে সরকারকে অনুরোধ করেন তিনি।

বলেন, ‘অন্যথায় জাতি আপনাদের ক্ষমা করবে না। এই দেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না। এই অপরাধের জন্যে, সংবিধান লঙ্ঘনের জন্যে একদিন না একদিন কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮)