আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ের পর প্রাণে বেঁচে গেল মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত যশোর রোডের শতবর্ষী ৩৫৬টি গাছ। একটি নাগরিক সংগঠনের পিটিশনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দেয়। খবর কলকাতা নিউজম্যানের।

যশোর রোড সম্প্রসারণের জন্য ৪,০৩৬টি গাছ কেটে ফেলের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সরকার। বিচারপতি এম বি লকুড় ও বিচারপতি দীপক গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শেষে এই গাছ কাটার সিদ্ধান্তের ওপর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আদালত দুই সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারকে সুপ্রিম কোর্টে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পেশ করতেও বলেছেন।

৩১ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ যশোর রোডের একটি গাছ কাটার পরিবর্তে পাঁচটি গাছ লাগানোর শর্তে গাছ কাটার বিরুদ্ধে একটি পিটিশন খারিজ করে।

১ সেপ্টেম্বর নাগরিক সংগঠনটি সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা গাছ না কাটার ওপর তিন সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেয়। এখন সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ের ওপর অনির্দিষ্টকালের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বুক চিরে চলে গেছে ঐতিহাসিক এই যশোর রোড। শুরু বাংলাদেশের যশোর জেলা থেকে। চলে এসেছে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত বেনাপোল-পেট্রাপোল পেরিয়ে সোজা কলকাতায়। সেই যশোর রোড নিয়ে কত কথা, কত কাহিনি, কত ইতিহাস এখনো ঘুরে বেড়ায় এই উপমহাদেশে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই যশোর রোড হয়ে উঠেছিল এক জীবন্ত ইতিহাস। এই রোড দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাড়ি দিয়েছেন শত্রুর মোকাবিলায়। এই রোডের পাশে কত মুক্তিযোদ্ধা আর শরণার্থীর ক্যাম্প গড়ে উঠেছিল। এই রোড ঘুরেছেন সেদিন বিশ্বের অনেক বড় বড় নেতা, কবি, সাহিত্যিকেরা।

বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে মমতা সরকার গত বছর যশোর রোড প্রশস্ত করে বারাসাত-বনগাঁ রোডে সাতটি ফ্লাইওভার নির্মাণের করার ঘোষণা দেয়।

এই কারণে এই রোডের চার হাজার ৩৬টি গাছ কাটার প্রয়োজন পড়বে। তারমধ্যে কিছু গাছের বয়স দুইশ বছরের বেশি। ইতোমধ্যে গত বছরের মার্চ-এপ্রিলে যশোর রোডে ২০০-৩০০ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮)