বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি : আমদানি পণ্য খালাসে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের ডাকা ধমর্ঘটে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। তবে এ পথে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টার দিকে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ব্যবসায়ীরা পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে ধর্মঘটের ডাক দেন।

পেট্রাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে বাণিজ্যিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হয়। সেখানে আমদানি পণ্য খালাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহনশীল পর্যায়ে লেনদেনে উভয়পক্ষের মধ্যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বেনাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীরা ওই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ট্রাকচালকদের কাছ থেকে আবারও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে থাকে। এতে ভারতীয় ব্যবসায়ী নেতারা প্রতিবাদ জানিয়ে এপথে আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন বলেন, আমদানি পণ্য খালাসে তারা নিয়ম মেনেই ভারতীয় প্রতিনিধিদের কাছ থেকে খরচের টাকা নিয়ে থাকেন। বেশি আদায়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

বেনাপোল কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (ইন্সপেক্টর) অলি উল্লাহ জানান, সকাল থেকে স্বাভাবিক বাণিজ্য চলছিল। বেলা ১টার দিকে তা বন্ধ হয়ে যায়। লোকমুখে জেনেছেন, পণ্য খালাসে লেনদেন নিয়ে ভারত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে ঢুকছে না। পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ পণ্য দিলে তারা গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছেন।

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বলেন, এপথে আমদানি বাণিজ্য বন্ধ থাকায় বেনাপোল ও পেট্রাপোল দুই বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় আটকা রয়েছে পণ্যবাহী সহস্রাধিক ট্রাক। এর মধ্যে মেশিনারি, গার্মেন্টস সামগ্রীর কাঁচামালের পাশাপাশি মাছ, পানসহ বিভিন্ন ধরনের পচনশীল পণ্য রয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান না করলে ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম জানান, আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দর অভ্যন্তরে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক রয়েছে। বাণিজ্য সচল করতে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

বেনাপোল ইমিগ্রশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলে এপথে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

উল্লেখ্য, যোগোযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এপথে ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। সপ্তাহে শুক্রবার ছাড়া অন্য সবদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা আমদানি-রফতানি বাণিজ্য চলে। প্রায় ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান এই বন্দরে। প্রতি বছর এ বন্দর থেকে সরকার প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮)