উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যে, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, কণ্ঠভোটে জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছেডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮। (সুজন) সুশাসনের জন্য নাগরিক মনে করে, এই আইনটির অনেকগুলো ধারা (৮, ২৮, ২৯, ৩১) নিবর্তনমূলক, যে ধারাগুলোরব্যাপক অপব্যবহার হতে পদারে, বিশেষ করেনাগরিকদের হয়রানি ও কণ্ঠরোধ করা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ব্যাহত করার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। 

এই আইনেপরোয়ানা বা অনুমোদন ছাড়াই পুলিশের হাতেযে কাউকে তল্লাশি, জব্দ এবং গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা রয়েছে। তাই এই আইনকে অপব্যবহার করেপুলিশ সাধারণ নাগরিকদের হেনস্তা করতেপারে বলে আমরা মনে করি।তাছাড়া এই আইনের ৩২ ধারায় ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক আমলের অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩ অন্তর্ভুক্ত করায় দুর্নীতি-সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে বলেও আমরা মনে করি।

আমরা দেখেছি, এর আগে তথ্য প্রযুক্তি আইন ব্যবহার করে বিগত ছয় বছরে শত শত লোককে জবরদস্তিমূলকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং সে আইনটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল। এই কারণেডিজিটাল নিরাপত্তাআইনটি পাশ হওয়ার আগে বিভিন্ন মহল থেকেনানান পরামর্শ ও দাবিতুলে ধরা হয়েছিল, কিন্তু সরকার সেগুলো পুরোপুরি আমলে নেয়নি। বরং বাতিল হওয়াতথ্য প্রযুক্তি আইনের৫৭ ধারাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কয়েকটি (২৫, ২৮, ২৯ ও৩১) ধারায় ভাগ করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ৫৭ ধারাকে ভেঙে ভেঙে, কিছুটা নতুন শব্দচয়ন করে, ক্ষেত্রবিশেষে কিছুটা শাস্তি কমিয়ে, প্রায় অবিকলভাবে নতুন আইনে রাখা হয়েছে।

সুজন মনে করে,যে কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক সমাজে মত-বিমত থাকতেই পারে। তাছাড়াআমাদের আইন ও সংবিধান যেখানে নাগরিকের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা তথা বাক্ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছে এই ধরনের নিবর্তনমূলক আইনপ্রণয়ন হওয়া সত্যিই দুঃখজনক। আমরা মনে করি, এইআইনটি মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি।এটি দেশে গণতান্ত্রিক পরিসরকে সঙ্কুচিত করবে, নাগরিকদের বাক্-স্বাধীনতা হরণ করবে এবং নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতাবোধ সৃষ্টি করবে।

আমরা ‘সুজন’-এর পক্ষ থেকে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নিবর্তনমূলক ধারাগুলো বাতিল করে আইনটি পুনঃসংশোধন করার জোর দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে উপরোক্ত বিলে স্বাক্ষর না করে আইনটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানাচ্ছি।

(পিআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮)