রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : আগামিকাল রবিবার সাতক্ষীরার চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র গৌতম সরকার হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে। ১১ সেপ্টেম্বর আসামীদের ৩৪২ ধারায় জবানবন্দি শেষে জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার এ দিন ধার্য করেন।

মামলার আসামীরা হলেন সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের আলী আহম্মেদ শাওন, ভাড়–খালি গ্রামের শাহাদাৎ হোসেন, নাজমুল হোসেন, ওমর ফারুক, নূর আহম্মেদ মুক্ত, মহাদেবনগর গ্রামের সাজু শেখ, মহসিন আলী, কবিরুল ইসলাম মিঠু, জামসেদ আলী ও ফিরোজা খাতুন।

মামলার বিবরণে জানা যায়,১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের মহাদেবনগর গ্রামের ইউপি সদস্য গনেশ সরকারের ছেলে সীমান্ত ডিগ্রী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র গৌতম সরকারকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে তার বাড়ির পাশে মোকলেছুর রহমানের নির্মাণাধীন বাড়িতে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তার গালের মধ্যে গুলের কৌটা ঢুকিয়ে মুখে ক্রস টেপ সেঁেট দেওয়া হয়। পরে লাশের বিভিন্ন স্থানে দড়ি দিয়ে ১২টি ইট ঝুলিয়ে পার্শ্ববর্তী মোকলেছুর রহমানের পুকুরে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে ডুবিয়ে দেওয়া হয়।

নিহতের পিতা গনেশ সরকার বাদি হয়ে আলী আহম্মেদ শাওন, শাহাদাৎ হোসেন, সাজু শেখ, নাজমুল হোসেন, মুহসিন আলী, কবিরুল ইসলাম মিঠুর নামে ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামীদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ি পরদিন ওমর ফারুক, নূর আহম্মেদ মুক্ত ও জামসেদের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি সম্পুরক অভিযোগ দায়ের করা হয়। নাজমুল, শাহাদাৎ ও সাজু শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এ ঘটনায় পুলিশ সাজু শেখের মা ফিরোজা খাতুনকে
গ্রেফতার করে। ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর সম্পুরক অভিযোগটি

আদালতে পাঠানো হয়। সদর থানার উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামানের কাছ থেকে মামলাটির তদন্তভার গত বছরের ৫ জানুয়ারি মমালার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক আশরাফুল ইসলামের কাছে ন্যস্ত করা হয়। গত বছরের ১৮ এপ্রিল উপরোক্ত ১০ আসামীর নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগত্র দাখিল করেন। চলতি বছরের পহেলা মার্চ সকল আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠণ করা হয়।

গ্রেফতারের পর থেকে শাহাদাৎ হোসেন ও নাজমুল হোসেন জেল হাজতে রয়েছেন। জামিনে মুক্তি পেয়ে ফিরোজা খাতুন, আলী আহম্মেদ শাওন ও সাজু শেখ পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. ওসমান গনি জানান, এ পর্যন্ত মামলার ১৬ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। তবে গত ৩০ আগষ্ট মামলার প্রথম তদন্তকারি কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামান আদালতে সাক্ষী দিতে আসেননি। রবিবার রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামী পক্ষ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮)