নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়ায় অগ্রণী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ও জন প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ১’শ ৮জনের কাছ থেকে তাদের ভাতার টাকা থেকে জনপ্রতি ১হাজার টাকা করে কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অগ্রণী ব্যাংক লোহাগড়া বাজার শাখা থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় ভূক্তভোগীরা সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। 

টাকা কেটে নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, অগ্রণী ব্যাংকের লোহাগড়া শাখার ক্যাশিয়ার শেখ জাহাঙ্গীর আলম, নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম কালু, ইউপি সদস্য মোহাম্মাদ মোল্যা, শিবানী রানী বিশ্বাস, মোস্তাক আহম্মদ নাইসসহ বেশ কয়েকজন। তারা ভাতা ভোগীদের কাছ থেকে মোট ১লাখ ৮ হাজার টাকা কেটে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরজমিন জানা গেছে, উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী মোট ১’শ ৮জনকে অগ্রণী ব্যাংক লোহাগড়া বাজার শাখা থেকে গত শুক্রবার বন্ধের দিনে টাকা বিতরণ করা হয়। অগ্রণী ব্যাংকের লোহাগড়া শাখা থেকে টাকা দেওয়া শুরু হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পরস্পরের যোগসাজশে ভাতাভোগীদের চেক বইয়ের পাতায় টিপসই নিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১হাজার করে টাকা কেটে নেন।

নাম প্রকাশ করা হবে না এই শর্তে ওই ইউনিয়নের একাধিক ভুক্তভোগীরা জানান, বয়স্ক ও বিধবাদের ৬ হাজার টাকার পরিবর্তে দেওয়া হয় ৫ হাজার টাকা এবং প্রতিবন্ধীদের ৮ হাজার ৪’শ টাকার স্থলে দেওয়া হয় ৭ হাজার ৪’শ টাকা। টাকা কম দেওয়ার বিষয়টি নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম কালু ,ইউপি সদস্য মোহাম্মাদ মোল্যা ও ক্যাশিয়ার জাহাঙ্গীর আলম অস্বীকার করেন। ওই ভুক্তভোগীরা আরও জানান, টাকা কেটে নেওয়ার বিষয়টি ফাঁস হলে পরবর্ত্তীতে তাদের ভাতা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জন প্রতিনিধিরা শাসিয়েছে।

লোহাগড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শামীম রেজা বলেন, ‘ভাতাভোগীরা স্ব-স্ব ব্যাংক হিসাব থেকে চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করবেন। সমাজসেবা অফিসের নামে কেহ টাকা নিলে এবং এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অগ্রণী ব্যাংক লোহাগড়া বাজার শাখার ব্যবস্থাপক ইসমাইল হোসেন বলেন, ভাতাভোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রায় দু’বছর ধরে বন্ধের দিনে ভাতার টাকা দেওয়া হচ্ছে। তবে কোন ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে গতকাল শনিবার লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকুল কুমার মৈত্র বলেন, টাকা কেটে নেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরএম/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮)