ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ‘চিরায়ত শ্বসত বাংলার চিরায়ত অনুষ্ঠান নৌকা বাইচ। বঙ্গবন্ধুর প্রাণের প্রতীক নৌকা বাংলার মানুষের অন্তরে গেঁথে আছে। হক-ভাসানীর নৌকা, বঙ্গবন্ধ্রু নৌকা। নির্বাচনের প্রতীক নৌকা । আগামী নির্বাচনে নৌকা ভাসতে ভাসতে বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাবে।’ 

শনিবার ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের নবীনগরে নীলকুঠি কাচারি বাড়ী পদ্মা শাখা নদীতে গণ আনন্দ ‘নৌকা বাইচ’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এম.পি. একথা বলেন।

ভূমি মন্ত্রী শরীফ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা নীরবে নিভৃতে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়ে চলেছেন। দেশ উন্নতির দিকে যাচ্ছে। গণমানুষের উন্নতি হলে দেশ উন্নত হবে।

লক্ষিকুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বিশ্বাসের আয়োজনে ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, জাতির জনকের নেতৃত্বে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত প্রতিটি সংগ্রামে বাঙ্গালি জাতি বিজয় অর্জন করেছে। বাঙ্গালি জাতি বঙ্গবন্ধুর নৌকা প্রতীককে এবারও জয়যুক্ত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হবে।

আনন্দঘন পরিবেশে পদ্মা নদীর দু’কূল ছাপিয়ে পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলার লাখো নারী পুরুষ নৌকা বাইচ খেলা উপভোগ করেন। বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেস ফাইটার, সোনার বাংলা, সোনার তরী, ময়ুরপক্সক্ষী, মায়ের দোয়া পঙ্খিরাজ বিভিন্ন নামে এরকম ৮টি নৌকা ‘নৌকা বাইচ” প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

অনুষ্ঠানে আমেরিকা প্রবাসী সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব সাব্বির আহমেদ, পাবনা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) সাহেদ পারভেজ, উপজেলা চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান মিন্টু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন, এসিল্যান্ড জোবায়ের হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নায়েব আলী বিশ্বাস প্রমুখ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

পদ্মানদীর লম্বা দুই তীর জুড়ে লাখো মানুষের গণজমায়েত। শরীক হয়েছেন নারী-পুরুষ-আবাল-বৃদ্ধ বণিতা। নৌকা বাইচ উপলক্ষ্যে বসেছে ছোট ছোট হরেক রকম বিকি কিনির দোকান। বাড়িতে বাড়িতে এসছে দূর-দূরান্ত হতে আত্মীয় স্বজন, মেয়ে-জামাই। এলাকার ঘরে ঘরে চলছে উৎসবের আমেজ। সকাল হতেই জমায়েত বাড়তে থাকে পদ্মাপাড়ে। শ্যালোর নৌকায় বাধা মাইক, বাঁশির ভূঁ-ভা শব্দ আর হরেক রকমের সুরালো বোল (আঞ্চলিক শব্দ অর্থাৎ বচন) । পদ্মা নদীতে শোভা বর্ধন করেছে, নানা নামের নৌকা, রং-বেরংয়ের পোশাকে সজ্জিত হয়ে বাইচে অংশ গ্রহন করেছে খেলোয়াড়রা। নৌকায় উড়ানো হয়েছে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা। নৌকার লগি বৈঠা (হাল) ধরে একই সাথে উচ্চারিত হচ্ছে “ বল বল বল বল রে, আল্লাহ বল রে”, “হেইয়া রে হেইয়া বল”। “আয়ছি মেলায় খেলবো খেলা”। “শেখ হাসিনার নৌকা, জিতবে বারে বার” সহ নানা রকমের বোল।

নৌকা বাইচের আয়োজক লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান শরিফ জানান, একসময় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা এলাকার মানুষের প্রাণের উৎসব ছিলো। পদ্মা পাড়ের মানুষ নদীর সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই প্রতিযোগিতাটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অসন্তোষের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিলো। ভূমিমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় বর্তমানে লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের মানুষ শান্ত হয়ে গেছে। সব দিক থেকে এলাকায় উৎবেরর আমেজে মনোরম পরিবেশ বিরাজ করছে।

(এসকেকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮)