আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মালদ্বীপে ব্যাপক সমালোচনার মুখে চলছে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কড়া নজর রাখছে ভারত এবং চীন। বিরোধী দল অভিযোগ করছে নির্বাচন কমিশন সরকারের পক্ষে কাজ করছে আর এখানে গণমাধ্যমের মুখ চেপে ধরা হয়েছে বলে সরকারের সমালোচনা করছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয় দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন চীনের সমর্থনপুষ্ট অপরদিকে তার বিরোধী ইব্রাহীম মোহাম্মদ সলিহ ভারত এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বেশ ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যদি গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির উন্নতি না হয় তাহলে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। নির্বাচনের আগের দিন বিরোধী দলের সদর দফতরে পুলিশ হানা দিয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সুত্রে জানা গেছে।

মালদ্বীপে গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীতে সুপ্রিম কোর্ট দেশটির সাবেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ নাশীদসহ বিরোধী দলীয় নয় নেতাকে দোষীসাব্যস্ত করে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন দেশটিতে জরুরী অবস্থা জারি করে দুই বিচারককে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলে আদালত ওই রায়ের সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে আসে।

ইয়ামিনের এই ঘটনা তার পুনরায় পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয় এটা বোঝা যায় যে তার শাসনামলে সে কোনো ধরণের চ্যালেঞ্জকে আমলে নেবে না। এরপর থেকেই ওয়াশিংটন, লন্ডন এবং নায়াদিল্লি এ ঘটনার সমালোচনা করতে থাকে।

বিরোধীদলীয় জোট বলছে মালদ্বীপ নির্বাচন কমিশন ইয়ামিনের পক্ষে কাজ করছে এবং তারা পর্যবেক্ষকদের ব্যালটপেপার মূল্যায়নের সুযোগ দেবে না। ইয়ামিনকে জেতাতে নির্বাচন কমিশন ব্যাপক জালিয়াতি করছে বলেও অভিযোগ তোলে তারা।

সরকারের সমালোচনা করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর এশিয়া বিষয়ক সহকারী পরিচালক প্যাট্রিসিয়া গসম্যান বলেন, মালদ্বীপ কর্তৃপক্ষ প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকে জয়ী করতে গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করে রেখেছে এবং নির্বাচন কমশিনকে বিরোধীদের দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

উল্লেখ্য, দেশটিতে মোট এক হাজার ১৯২টি দ্বীপ এবং ২৬টি প্রবাল প্রাচীর রয়েছে। তাছাড়া দেশটির অর্থনীতির একটি প্রধান চালিকাশক্তি হলো এর পর্যটন খাত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই দ্বীপরাষ্ট্রটির কমপক্ষে চার লাখ মানুষের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে মরার ওপর খারার ঘা হিসেবে দেখা দিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নির্বাচনের জটিলতা।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮)