আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : জেলার উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টুর প্রকৃত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার বেলা ১১টায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুসের অংশগ্রহণে মিছিল শেষে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের ইচলাদি বাসষ্ট্যান্ডে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস এমপি, উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল, পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গৌরনদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন্নাহার মেরী প্রমুখ।

বক্তারা প্রকৃত হত্যাকারীদের আড়াল করতে কাউকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার না করার আহবান জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবি করেন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে উজিরপুরের কারফা বাজারের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু। এ সময় নিহান হালদার নামে তার ভাগোন গুলিবিদ্ধ হন। চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবরের পরপরই জল্লা ইউনিয়ন জুড়ে বিক্ষোভে ফেঁটে পরেন এলাকাবাসী। শনিবার দুপুরে কোন কারন ছাড়াই বিক্ষোভের নামে কতিপয় সুবিধাবাদিরা সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাঁধাতে কারফা বাজারের পাঁচটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের পাশাপাশি স্থানীয় সোহাগ সিকদারের তিনতলা একটি ভবনে অগ্নিসংযোগ করেছে। অন্যদিকে শুক্রবার রাতে নান্টুর মৃত্যুর খবরের পরপরই ওই এলাকায় আরও তিনটি ঘর ভাংচুর করা হয়।

এসময় একটি ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গেলে বিক্ষুব্ধরা ডিবি পুলিশবহনকারী একটি গাড়ি ভাংচুর করেছে। পাশাপাশি প্রকৃত হত্যাকারীদের আড়াল করতে একটি বিশেষ মহল স্থানীয় সংসদ সদস্যর ব্যক্তিগত সহকারীসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা হত্যার সাথে সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। অপরদিকে ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু হত্যার ঘটনায় তার বাবা সুখলাল হালদার বাদি হয়ে শনিবার রাতে উজিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করেছে। আওয়ামী লীগ নেতা হত্যাকান্ডের ঘটনায় উজিরপুর থানার ওসি’র বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতির অভিযোগ উঠলেও সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্থানীয় কুড়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিজান ও এবি ইউসুফকে শনিবার রাতে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

একটি গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, মাদক ব্যবসা ও আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশেষ কোন মহল ফায়দা লোটার জন্য এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে কিনা সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকটি দল তদন্তে নেমেছেন। একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অবনি বাড়ৈকেও ২০০৩ সালে দুর্বৃত্তরা হত্যা করেছিলো।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮)