উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যুক্তফ্রন্টের নামে দুর্নীতিবাজরা এক হয়েছে। তবে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। নৌকা মার্কাই জয়ী হবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নৌকায় মার্কায় ভোট দিতে হবে এবং আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়লাভ করাতে হবে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ শান্তিতে আছে, শুধু শান্তিতে নেই বিএনপি।

রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের হোটেল হিলটনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া এক সংবর্ধনায় তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের জন্য দুর্নীতিবাজরা জোট বেঁধেছে বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সুদখোর-ঘুষখোর, খুনি, দুর্নীতিবাজরা একত্র হয়ে সরকারবিরোধী জোট গড়েছে। যারা মানুষ হত্যাকারীদের সঙ্গে জোট করতে পারে, তাদের মুখে দেশের স্বার্থের কথা মানায় না। দেশের উন্নয়ন চাইলে আগামীতেও নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।’

এসব চক্রান্ত সম্পর্কে সজাগ থাকার জন্য প্রবাসীদের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সততায় বিশ্বাস করে। মনুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করে। আর মানুষ শান্তিতে থাকলে বিএনপি অশান্তিতে থাকে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের শৃঙ্খলার স্বার্থে এবং জনগণের নিরাপত্তা দিতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এত দুর্নীতি করেছে যে তারা এফবিআই’র অফিসার ক্রয় করেছিলো সজিব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা এবং অপহরণ করতে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সাজা প্রাপ্ত আসামি তাই জেলে রয়েছে, তারেক রহমান ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এ সব মামলা আমার সরকার করেনি। তার পছন্দের লোকজনই করেছিলো।

তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের জনজনের ভাগ্য পরিবর্তন করতে এসেছি। জনগণ ভোট দিলে ক্ষমতায় থাকবো, না দিলে থাকবো না। আমার চাওয়া- পাওয়ার কিছু নেই।

তিনি আরো বলেন, আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। আমার বোন রেহানা আমাকে বলেছে ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারলে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকেও খাওয়াতে পারবো।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রবিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা ২৩ মিনিটে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দিতে সপ্তাহব্যাপী সরকারি সফরে নিউইয়র্কে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে নিউইয়র্কের লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ জিয়াউদ্দিন ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সুশোভিত মোটর শোভাযাত্রাসহ নিউইয়র্কের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন।

বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভিভিআইপি ফ্লাইটে (বিজি-০০১) করে নিউইয়র্কের উদ্দেশে লন্ডনের পথে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে দুইদিনের যাত্রাবিরতির পর নিউইয়র্কের উদ্দেশে লন্ডন ছাড়েন তিনি।

জাতিসংঘে এবারের সফরে ৫০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্যবসায়ীদের ২০০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও তার সফরসঙ্গী হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেবেন এবং একই দিন তার জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন- এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্রেস্টি কালজুলেইদ এবং নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেবেন এবং সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এ বছর সাধারণ অধিবেশনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘মেকিং দ্য ইউনাইটেড নেশন্স রিলেভেন্ট টু অল পিপল : গ্লোবাল লিডারশিপ অ্যান্ড শেয়ারড রেসপনসিবিলিটিস ফর পিসফুল, ইকুইট্যাবল অ্যান্ড সাসটেইন্যাবল সোসাইটিজ।’

(এ/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৮)