আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের সার্বভৌমত্বে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ শীর্ষ জেনারেলদের বিচারের মুখোমুখি করার জন্য জাতিসংঘ আহ্বান জানানোর এক সপ্তাহ পর এ কথা বললেন তিনি।

এর আগে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ শীর্ষ জেনারেলদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মুখোমুখি করতে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের আহ্বান জানায় জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। তার প্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো এই ইস্যুতে কথা বললেন দেশটির সেনাপ্রধান।

দেশটির সেনাবাহিনী পরিচালিত সংবাদমাধ্যম মিয়াওয়াদির প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেনারেল মিন অং হ্লেইং রোববার সৈন্যদের প্রতি দেয়া এক বক্তব্যে বলেন, 'কোনো দেশ, সংগঠন অথবা গোষ্ঠীর একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কিংবা সিদ্ধান্ত দেওয়ার অধিকার নেই। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মধ্যস্ততা করতে আসলে তাতে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।'

জাতিসংঘের তদন্ত দল রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর নিপীড়ন ও গণহত্যার যথেষ্ঠ তথ্য-প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে। যার কারণে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাস্তুহারা হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।

গত বছরের আগস্টে রাখাইনের বেশ কয়েকটি পুলিশ ও সেনা পোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। রাখাইনের সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ এবং নির্যাতনসহ অমানবিক জুলুম চালিয়েছে। তবে সেনাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রাজ্যটিতে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের দমনের কথা বলে এ নির্যাতনকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করে।

অং সান সুচির মিয়ানমারের বেসামরিক সরকার ইতোমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদনকে অস্বীকার করে এটিকে একতরফা বলে অভিযুক্ত করেছে। এছাড়াও তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচার-সংক্রান্ত যে সিদ্ধান্ত সেটিকেও অগ্রাহ্য করেছে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৮)