রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় যথাযথ অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন স্থানে জ্বালানি তেলের ব্যবসা জমে উঠেছে। বাড়ছে জ্বালানি তেল বিক্রির অবৈধ দোকানের সংখ্যাও। এর ফলে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। 

তাছাড়া কেরোসিনের সঙ্গে এক ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে কেরোসিনের রং সাদা করে পেট্রোলে মিশিয়ে বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগে জানা গেছে। এসব জ্বালানি ব্যবহারে কমে যাচ্ছে যানবাহনের আয়ুষ্কাল। এতে যানবাহনের মালিকদের মধ্যে বিরাজ করছে অসন্তোষ। অনেক তেলের দোকান রাস্তার খোলা স্থানে ও বাসাবাড়ির সামনে গড়ে ওঠায় স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে বাস করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রায়পুরে ৩টি পাম্পের জ্বালানি তেল বিক্রির বৈধ লাইসেন্স ও অনুমোদন রয়েছে। খোলা বাজারে বিক্রির জন্য ১০ জন ডিলার রয়েছে। অথচ সকল নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে শুধু পৌর শহরেই প্রায় শতাধিক জ্বালানি তেল বা পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ বিক্রির দোকান গড়ে উঠেছে। এসব দোকান যেমন অবৈধ, তেমনি এদের তেল সংগ্রহ পদ্ধতিও অবৈধ। এছাড়াও ইউনিয়নগুলোতে রয়েছে অগণিত অবৈধ দোকান। আর এসব দোকান থেকে নাশকতাকারীরা খুব সহজেই জ্বালানি ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে তান্ডব চালায় বলে অভিযোগ আছে।

পেট্রোলিয়াম সংক্রান্ত আইন অনুসারে জ্বালানি তেল পেট্রোল-ডিজেলের ব্যবসার জন্য বিস্ফোরক পরিদপ্তরের পূর্ব অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। অথচ সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে, এমনকি কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই এসব প্রতিষ্ঠান এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে সংগৃহীত এবং চোরাপথে আসা গ্যাস কনডেনসেট বা তলানিসহ অন্যান্য নিম্নমানের পদার্থ মিশিয়ে তেল বিক্রি করা হয়। মাপে কম দেওয়াও অবৈধ তেল ব্যবসায়ীদের আরেকটি প্রবণতা।

ভুক্তভোগীরা জানান, এসব নিম্নমানের ভেজাল তেল ব্যবহার করায় গাড়ির ইঞ্জিনের মারাত্মক ক্ষতি তো হয়ই, এর কালো ধোঁয়ায় পরিবেশও দূষিত করে। এই তেলে যাত্রীদের চোখ জ্বলে এবং ইঞ্জিন থেকেও বেশি শব্দ হয়। এসব ভেজাল চোরাই তেলে গাড়ির মাইলেজ কমে যায়।

শহরের দুজন পেট্রোল পাম্পের ম্যানেজার জানান, জ্বালানি তেলে ভেজাল হচ্ছে সত্য। তবে পাম্পগুলোতে কম হচ্ছে। বেশি ভেজাল করে খোলা বাজারের দোকানিরা।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিল্পী রানী রায় বলেন, ভেজাল জ্বালানি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে পাম্প মালিকদের বলা হয়েছে ভেজাল জ্বালানি তেল বিক্রয় না করার জন্য।

(পিকেআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮)