রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : রায়পুর উপজেলার মেঘনা নদীতে গত দুদিন ধরে বহু আকাঙ্খিত রূপালী ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের মৌসুম শুরুর কয়েক মাস জেলেরা অলস সময় কাটানোর পর মেঘনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে। এতে উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার জেলের মধ্যে উচ্ছাস দেখা দিয়েছে।

সাপ্তাহিত বাজারের দিনে (সোমবার সন্ধ্যায়) শহরের নতুন বাজারে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে বড় ইলিশ দেখা যায়। বাজারে ইলিশের দাম ভালো থাকায় উপজেলার জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

রায়পুর উপজেলা মৎস কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী, উত্তর চর আবাবিল, দক্ষিণ চর আবাবিল ইউনিয়নের ৭ হাজার ২৩০ জেলে পরিবার রয়েছে। মাছ ধরা ও বিক্রি করাই তাদের পেশা। মহাজনদের দাদন আর বিভিন্ন সমিতি থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে জলদস্যুদের ভয় উপেক্ষা করে এখন জেলেরা ছুটছেন নদীতে। একদিকে উত্তাল মেঘনা, অন্যদিকে ইলিশের ঝাঁক।

সরজমিনে মেঘনা পাড়ে গিয়ে জেলেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুই মাস ধরে অলস সময় কাটানোর পর জেলেরা নৌকা নিয়ে দিনভর নদীতে জাল ফেলে ৮-১০টির বেশি ইলিশ পেতো না, সেখানে গত দুদিন ধরে ১০০-১৫০টির মতো ইলিশ তাদের জালে ধরা পড়ছে। মাছ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলে পল্লী ও আড়তগুলোতে বেড়েছে ব্যস্ততা। ধরা পড়া মাছগুলো আকারেও বড়। ধরা মাছের মধ্যে ২ কেজি ওজনের ইলিশও রয়েছে। এ ছাড়া ১ থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বেশির ভাগই ধরা পড়ছে। এ সব ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা দরে।

জেলেপল্লী চরবংশীর নাইয়াপাড়া এলাকার কয়েকজন জেলে জানায়, মেঘনা নদীতে কয়েকদিন আগেও ইলিশের দেখা পাওয়া যায়নি। সারাদিন জাল পেলে নদীতে মাছ না পেয়ে তারা হতাশ হয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরতেন। এতে পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে গত কয়েক মাস ধরে দুর্বিষহ জীবনযাপন করেছেন। গত রবিবার থেকে নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশের দেখা মিলতে শুরু করায় জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে।

উপজেলার সিনিয়র মত্স্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, জাটকা নিধন অভিযান সফল হওয়ার কারণে জেলেরা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে বড় আকারের ইলিশ পাচ্ছে। এতে জেলে পরিবারগুলোর মুখে হাসি ফুটে উঠছে। বাজারে ইলিশের ভালো দাম থাকায় জেলেরা লাভের মুখ দেখবে। তিনি আরো জানান, নদীতে মাছ ধরা বন্ধের কোনো চিঠি এখনো আমরা পাইনি। তবে মা ইলিশ সংরক্ষণের প্রধান প্রজনন মৌসুমে আগামী ৭ অক্টোবর থেকে জারি করা হতে পারে।

(পিকেআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮)