বাগেরহাট প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগর সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে বাগেরহাটের আরও ৩ উপজেলা চিতলমারী, ফকিরহাট  ও সদর উপজেলার কমপক্ষে ২০টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ঘর-বাড়ী  ও অসংখ্যা চিংড়ি ঘের।

এ কারনে সাধারন মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। এরআগে জোয়ারের পানিতে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ভবনের নিচতলার অফিস গুলোতে পানি উঠে যাওয়াসহ মংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরনখোলা উপজেলার অধিকাংশ সড়কসহ বাড়ি-ঘর ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নিম্নাঞ্চল এলাকা তলিয়ে যায়। এতে করে সাধারন মানুষের রান্না-বান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় শত শত ফিশিং ট্রলার সুন্দরবনসহ উপকূলীয় বিভিন্ন নদী ও খালে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে।

প্লাবিত নতুন এলাকার মধ্যে রয়েছে, বাগেরহাট সদরের রহিমাবদ,মগড়া বাগমরা, চাপাতলা, যাত্রপুর, বারইপাড়া, হালিশহর, রাখালগাছি, খানপুর, বেমরতা, খালিশপুর, ফকিরহাটের পুটিয়া, গুড়গুড়িয়া, গেয়ালবাড়ি ও চিতলমারী উপজেলার ডুমুরিয়া, খিলিগাতি, সুড়িগাতি, জালডাঙ্গা, আড়–লিয়া, রায়গ্রাম, বড় সিঙ্গা, ছোট সিঙ্গা, পারকোড়ালিয়া। এছাড়া মঙ্গলবার রাতে ফকিরহাট ও চিতলমারী উপজেলার চিত্রানদীর ভেড়িবাধ ভেঙ্গে কয়েকটি এলাকা পানিবন্দী হয়ে পড়ে।

খিলিগাতি গ্রামের বিশিষ্ট সমাজ সেবক আব্দুল জলিল ফকির জানান, চিত্রা নদীর ভেড়িবাধ উপচে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বাড়ী-ঘর ৩-৪ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। রান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা শুকনো খাবার খাচ্ছেন। এছাড়া এলাকার চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে। নিম্ন আয়ের মানুষের সাহায্যে কোন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কেউ তাদের খোজ নিতে আসেনি বলে জানান।

মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ এলাকার ফেরদৌস হোসেন মুন্সী ও মজিবুর রহমান জানান, কেওড়া নদীর বেঁড়িবাঁধ না থাকায় কয়েকটি গ্রামগুলোর মধ্যে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় সবচেয়ে নিম্ম আয়ের মানুষের নানান ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ৪-৫ দিন ধরে অনেক পরিবারের রান্না-বানানা হয়নি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র মন্ডল জানান, গত ৪ দিনে অস্বাভাবিক ভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ২ শতাধিক চিংড়ি ঘের ও ৫ শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এই অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে কি পরিমান চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে কি পরিমান ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা নিরপনে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

(একে/এটিঅার/জুলাই ১৬, ২০১৪)