স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশই বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী। তাই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখতে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ।

বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে এ কথা জানান তোফায়েল আহমেদ। এ সময় ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী ও শিল্প এবং অসামরিক বিমানমন্ত্রী শ্রী সুরেশ প্রভু উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বৈঠকে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ করার বিষয়ে দুই দেশ যৌথভাবে একমত হয়েছে। আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের রূপান্তর হতে চলেছি। ২০২৭ সাল পর্যন্ত স্বল্পোন্নত দেশের শুল্ক মুক্ত সুযোগ-সুবিধা আমরা পাব। এরপর অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে 'জিএসপি প্লাস' সুবিধা দেয়ার কথা বলেছি। একই ধরনের সুবিধা ভারত থেকে পেতে ‘সিইপি’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, এখন ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক কোনো সমস্যা নেই। গঙ্গার পানি সমস্যা, পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে যেসব সমস্যা আছে সেগুলোও আলোচনার মাধ্যম্যে সমাধানের চেষ্ঠা চলছে।

বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য ভারতে রফতানির ক্ষেত্রে এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। এটি প্রত্যাহারের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ীরা একসঙ্গে বসে এটি সমাধান করবে।

বৈঠক শেষে ভারতের মন্ত্রী শ্রী সুরেশ প্রভু বলেন, বাংলাদেশ ভারতের ব্যবসায়ীক চুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য জোরদার করতে আমরা এক সঙ্গে কাজ করব। পর্যটনসহ খাত ভিত্তিক বিনিয়োগে ভারত আগ্রহী। এ বিষয়ে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, দুই দেশের পণ্য বিক্রির উদ্যোগ হিসেবে সীমান্ত হাট বসানো হয়ে থাকে। এখন চারটি সীমান্ত হাট আছে, আরও ছয়টি করা হবে। কিছুদিনের মধ্যে নতুন একটি সীমান্ত হাট চালু হচ্ছে। এটি শেরপুরের ডালু-নাকুগাঁও সীমান্তে এ হাট হবে।

বর্তমানে যে চারটি সীমান্ত হাট চালু রয়েছে সেগুলো হলো- কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারি, সুনামগঞ্জের ডলুরা, ফেনীর ছাগলনাইয়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার তারাপুরে।

বাংলাদেশ স্টান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) অনুমোদিত পণ্য ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতির বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতে পণ্য রফতানিতে বিএসটিআইয়ের সনদ নিয়ে এখন আর কোনো সমস্যা হবে না। ২৭ খাদ্যপণ্যের মান নিয়ে আপত্তি না জানাতে ভারতের কাছে আবেদন করেছিলাম। তারা ২১ খাদ্যপণ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে। আজকে বাকি ছয়টি পণ্যের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর নতুন করে আরও ছয়টির বিষয়ে আবেদন করেছি, সেটাও হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল (বিবিআইএন) যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি করতে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তোফায়েল আহমেদ। এ সময় বাংলাদেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

বৈঠকে ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাসহ দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮)