সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭২ তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় নেত্রকোনা- ৩ আসনের এমপি ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক নেত্রকোনা-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী অসীম কুমার উকিলের তীব্র সমালোচনা করলেন কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নূরুল আলম মো: জাহাঙ্গীর চৌধুরী।

নেত্রকোনা জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা, নেত্রকোনা- ৩ আসনের আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সামসুল কবীর খানের আয়োজনে কেন্দুয়া নতুন বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় তার ব্যক্তিগত কার্যালয় প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ বক্তব্য রাখেন তিনি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: নূরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামীলীগ নেতা সামসুল কবীর খান, কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মিজানুর রহমান মিজান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল ওয়াহাব, মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সুলতানা পারভীন পপি সহ আওয়ামীলীগ ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের দুই শতাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক। শুক্রবার দুপুর ১২ টায় এ আলোচনা সভা শুরু হয়।

আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন, সাবেক যুবলীগ নেতা মোস্তাক আহম্মেদ। এ সভায় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেন, এম.পি ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু কলাগাছের মতো এম.পি। এই কলাগাছ একবারই ফলন দেয় তার পর আর ফলন দেয় না।

তিনি বলেন, এমপি পিন্টু নানা অনিয়ম দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। টি.আর, কা.বি.খা বন্টন করেও হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। শিক্ষক সহ বিভিন্ন নিয়োগের ক্ষেত্রে যাদের জন্য সুপারিশ করেছেন তারা বিএনপির জামাতের লোক। তাকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না দেয়ার জন্য দলিয় প্রধানের নিকট অনুরোধ জানান তিনি।

অপরদিকে কেন্দুয়া উপজেলা তথা নেত্রকোনা জেলায় দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য দায়ি করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা অসীম কুমার উকিলকে। তিনি বলেন, অসীম কুমার উকিল দলের চেইন অব কমান্ড নষ্ট করেছেন। বিগত দিনে শাড়ি, কাপড়, লুঙ্গি নির্বাচনী এলাকায় বিতরন করলেও উপজেলা বা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কাছ থেকে কোন তালিকা নেননি, কোন যাচাই বাচাই ছাড়াই তারা নিজেরাই দলের নেতাকর্মী কিংবা অন্য দলের নেতাকর্মীদের মাঝে এসব বিতরণ করেছেন। শেখ হাসিনার জন্মদিনে এমপি পিন্টু ও কেন্দ্রীয় নেতার প্রতি এরকম বিষোদাগার সমালোচনা করায় অনেকেই এর উল্টো সমালোচনা করেছেন।

কেন্দুয়া পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি কামরুল হাসান ভূঞা ও তার স্ত্রী যুব মহিলালীগের সভাপতি কল্যানী হাসান বলেন, জাহাঙ্গীর চৌধুরী নিজেই দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য আজকের এই আনন্দের দিনে দেশ রতান শেখ হাসিনার জন্মদিনে এমপি পিন্টু ও কেন্দ্রীয় নেতা অসীম উকিলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে জনসভায় সমালোচনার নিন্দা জানাই।

অবশ্য সভায় উপস্থিত উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকলে দেশের মানুষের কল্যান হয়। তিনি না থাকলে বিএনপি জামাতের নেতা প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে। তাই আসুন আজকে নেত্রীর জন্মদিনে আমরা সবাই আল্লাহর দরবারে তার দীর্ঘায়ু কামনা করি। তিনি অনেকদিন বেঁচে থাকুন এবং দেশের মানুষের কল্যান করুন।

এছাড়া সামসুল কবীর খান শেখ হাসিনার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়ে তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করেন।

আলোচনা সভায় অনেকেই জাহাঙ্গীর চৌধুরীর তীব্র সমালোচনার বক্তব্যে নীরব ভূমিকা পালন করেন।

সভা শেষে এমপি পিন্টু ও কেন্দ্রীয় নেতা অসীম উকিলের তীব্র সমালোচনার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, যা সত্য তাই বলেছি। আমি সবসময় এসব সত্যকথা বলেই যাব।

এ ব্যপারে মোবাইল ফোনে অসীম কুমার উকিল ও এমপি ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৮)