রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : ছাত্রী ও অভিভাবকদের নিয়ে নানা রকম আপত্তিকর মন্তব্য করায় এক শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করেছে টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযুক্ত সাঈদুর রহমান বাবুল বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। সে কালিহাতী উপজেলার পারখী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।

জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও অভিভাবকদের অশালিন মন্তব্য ও কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবলু। এরই ধারাবাহিকতায় রোবাবার নবম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেয় ওই শিক্ষক। ঘটনার পর সকল ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানায়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদার অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ছাত্রীদের স্কুল থেকে বের করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের স্বপক্ষে স্বাক্ষর নেন। স্কুল ছুটি শেষে ছাত্রীরা তাদের অভিভাবকদের বিষয়টি জানালে সোমবার সকালে অফিস কক্ষে বিদ্যালয়ের সহকারি ইংরেজী শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুলকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে সাঈদুর কৌশলে পালানোর চেষ্টা করে। পরে বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও অভিভাবকরা সাঈদুরকে ধরে গণ পিটুনি দেয়। এতে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই সাঈদুর রহমান বাবুল তাদের বিভিন্নভাবে কু-প্রস্তাব ও অশালিন মন্তব্য করে আসছিল। বিষয়টি একাধিকবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদারকে জানানোর পরেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করে তারা। সোমবার শিক্ষার্থীরা সকালে ক্লাস বর্জন করে ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে। তারা সাঈদুর রহমান বাবুল ও প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদারের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন তালুকদার জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সাঈদুর রহমান বাবুলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় টাঙ্গাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সায়েদুর রহমান জানান, অভিযুক্ত শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার রহমান বলেন, টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাঈদুর রহমান বাবুলকে ইভটিজিং এর দায়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সেই সাথে কোন অভিভাবক যদি তার বিরুদ্ধে মামলা করেন তাহলে পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(আরকেপি/এসপি/অক্টোবর ০১, ২০১৮)