সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের আগে চলছে মাঠের লড়াই। মাঠ দখলে সম্ভাব্য সব প্রার্থীরাই করছেন পথসভা, গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, মতবিনিময় সভা, শোডাউন ও জনসভা। 

নেত্রকোনা- ৩ কেন্দুয়া-আটপাড়া নির্বাচনী এলাকায় তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে নৌকার গণজাগরণ সৃষ্টি করতে দীর্ঘদিন ধরেই অসীম কুমার উকিল ও অধ্যাপক অপু উকিল মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। প্রচারনা দৌড়ে তারা বেশ এগিয়ে। এবার মাঠ ছেড়ে সম্ভাব্য সব প্রার্থীরা এখন কেন্দ্রে ব্যস্ত রয়েছেন মনোনয়ন দৌড়ে । কেউই কারো থেকে কোন অবস্থাতেই চেষ্টা কম করছেন না। নিজ নিজ কৌশল অবলম্বন করে প্রত্যেকেই চাচ্ছেন আওয়ামীলীগের টিকিট আনতে। কিন্তু কার ভাগ্যে শিকে ছিড়বে এ নিয়ে এখনও কেউই নিশ্চিত ভাবে কিছুই বলতে পারছেন না। তবে সব প্রার্থীই নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারন জনতাকেও আশ্বস্থ করছেন তিনিই পাবেন নৌকার টিকিট। এ ধুম্র জালের মধ্যেই অবস্থান করছেন নেতাকর্মী সমর্থক ও সাধারন জনগণও।

নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মী সমর্থক ও জনগনের বিচারে বিভিন্ন দিক বিশ্লেষন করে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ৯০’র গণ আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা অসীম কুমার উকিল একজন হেভী ওয়েট প্রার্থী। নেতাকর্মী ও সমর্থকদের চুল ছেড়া বিশ্লেষনে বেড়িয়ে আসে, অসীম কুমার উকিল ছাত্রজীবন থেকেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়ে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান দিয়ে রাজপথ কাপিয়ে তুলেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৯০’র এরশাদ বিরোধী গণআন্দোলনে নিজের জীবনকে বাজী রেখে আন্দোলন ছেড়ে যান নি তিনি। সে সময় বাংলাদেশের ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবীব এরশাদ সরকারের চাপের মুখে দলের পদ ছেড়ে চলে যান।

এরপর বিভিন্ন সময় গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অসীম কুমার উকিল গ্রেফতার হয়েছেন, কারা বরণ করেছেন তবুও শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও দলকে ছেড়ে যেতে আপোস করেননি তিনি। রাজনীতির দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় একজন সৎ, আদর্শিক এবং বিজ্ঞান মনষ্ক নেতা হিসেবে সমাজে ও সারা দেশে তার একটা পরিচিতি আছে। আপাদমস্তক বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শের সৈনিক হিসেবে শেখ হাসিনার একজন বিশ্বস্ত কর্মী হয়ে বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সঙ্গে এবারই তিনি জোরে সোরে নেত্রকোনা- ৩ আসন থেকে দলের মনোনয়ন চাইছেন এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মাঠে কাজ করছেন অনেক আগে থেকেই। তিনি বিভিন্ন পথসভা ও জনসভায় নৌকার ভোট বাড়াতে দিনরাত পরিশ্রম করছেন।

প্রতিটি সভা সমাবেশে বলছেন, শেখ হাসিানর নেতৃত্বে অবহেলিত কেন্দুয়া আটপাড়া উপজেলাকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে যেতে চাই। এজন্য চাই মহান সংসদে কথা বলার অধিকার । তিনি বলেন, যতদিন শেখ হাসিনার হাতে থাকবে দেশ, ততদিন নিরাপদে বাংলাদেশ। নির্বাচনী মাঠে এবার তিনি মনোয়ন পাচ্ছেন এটা সবার মুখে মুখে আলোচনায় ফিরছে। প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পক্ষে কেন্দুয়া ও আটপাড়া উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সিংহভাগ নেতাকর্মী দলীয় প্রধান, শেখ হাসিনার নিকট এবার অসীম কুমার উকিলকে মনোনয়ন দেয়ার জোর দাবী তোলেছেন।

বলাইশিমুল ইউনিয়ন আওয়ামলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম, দলপা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিউর রহমান, মাসকা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান খান পাঠান, গন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম সঞ্জু, সান্দিকোণা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম, রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট নূরুল আলম, পাইকুড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: বদরুল ইসলাম, মোজাফরপ্রু ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: দিদারুল ইসলাম, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: কামরুল হাসান ভূঞা, গড়াডোবা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: শাহজাহান ভূঞা, আশুজিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মঞ্জুর আলী নতুন মুখের প্রার্থীর পক্ষেই মতামত ব্যক্ত করেন।

তারা বলেন, তৃণমূলের দাবী একটাই আগামী নির্বাচনে চাই নতুন মুখ। এই নতুন মুখের প্রার্থী না হলে নৌকার ভরাডুবি হবে বলে তাদের আশংকা।

তবে তারা বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা অসীম কুমার উকিলকে তৃণমূলে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছিলাম কিন্তু সে সময় তিনি মনোনয়ন পান নি। এজন্য নেতাকর্মীদের দাবী তিনি মনোনয়ন পেয়ে এম.পি নির্বাচিত হলে, তার মন্ত্রী হওয়ারও সম্ভাবনা আছে অনেক। এজন্যই তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তার দিকেই ঝুকে পড়েছেন বেশি। স্বামী অসীম উকিলকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ যুব মহিলালীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক এম.পি অধ্যাপক অপু উকিল হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতোই দলের সবসাড়ির নেতাকর্মীদের নৌকার পক্ষে উজ্জিবিত করছেন।

(এসবি/এসপি/অক্টোবর ০২, ২০১৮)