কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর একটি হত্যা মামলার আসামী মোহাম্মদ সুমন আলী মন্ডল(২২) নামের এক যুবকের হাতের কব্জি কর্তন এবং একটি চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। এসময় তার পিতা ও ২ ভাইকে অপহরণ করা হলেও তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে শহরের লিংক রোড এলাকা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মোহাম্মদ সুমন আলী মন্ডল নামের এ যুবককে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ সুমন আলী মন্ডল জানায়, ২০১১ সালে ৯ সেপ্টেম্বর টেকনাফ উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহর পুত্র অলি উল্লাহ আলো হত্যা মামলায় সে আটক হয়। ওই মামলায় ৪ বছর জেলে থাকার পর গত বুধবার বিকালে কারাগার থেকে সে জামিনে মুক্তি পায়। ওই সময় তার পিতা নঁওগার মহাদেবপুর উপজেলার পূর্ব নারায়ণপুর এলাকার আফতাব আহমদ ও তার দুই ভাই সোবহান আলী, মোহাম্মদ জুয়েল হোসেন তাকে নিতে কক্সবাজারে জেলা কারাগার গেটে আসেন। ওখান থেকে একটি সিএনজি যোগে বাস টার্মিনালে যাওয়ার পথে জেল গেটের বাইপাস সড়ক মোড়ে ওঁতপেতে থাকা একদল দুষ্কৃতিকারী তাদের গতিরোধ করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এসময় সুমনের পিতা এবং ২ ভাইকেও অপর একটি সিএনজিতে দুষ্কৃতিকারীরা তুলে নিয়ে যায়।

সুমন আরও জানায়, মাইক্রোবাসে থাকা টেকনাফ উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ছোট ভাই আবদুর রহমান ও তার চাচাত ভাই সাকের সহ অন্যান্যরা তার ডান হাতের কব্জি কেটে নেয়। একই সময় তারা ছুরিকাঘাতে করে তার ডানচোখ উপড়ে ফেলে। এরপর তার হাত, পা বেঁধে লিংক রোড এলাকার সড়কের পাশে ফেলা দেয়া হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।

কক্সবাজার সদর থানার অপারেশন কর্মকর্তা এসআই আবদুল কাইয়ুম জানিয়েছেন, মোহাম্মদ সুমন আলী মন্ডলের জবানবন্দি তারা গ্রহণ করেছেন। সুমন এ ঘটনার জন্য উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ছোট ভাই আবদুর রহমান ও সাকেরকে দায়ী করেছেন।

এদিকে, সুমনের নিখোঁজ পিতা ও ২ ভাইকে কক্সবাজার সিটি কলেজ সংলগ্ন এলাকা থেকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।

টেকনাফ উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার পুত্রকে হত্যার দায়ে গ্রেফতার হওয়া সুমন জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজন গডফাদারের নাম পুলিশের কাছে প্রকাশ করেছে। সুমন জামিন পাওয়ার পর ওই সব গডফাদাররা এ ঘটনা সংঘটিত করতে পারে। এতে তার ভাইরা জড়িত নয়। সুমন ফাঁসানোর জন্য তার ভাইদের নাম বলছে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর টেকনাফ উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহর পুত্র অলি উল্লাহ আলোকে জবাই করে হত্যা করা হয়। ওই সময় আবদুল্লাহর প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মোহাম্মদ সুমন আলী মন্ডলকে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছিল।

(টিটি/অ/জুলাই ১৬, ২০১৪)