উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : কুমিল্লার উত্তরে মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা আজনাপুর ও জামবাড়ি এলাকায় পাকসেনাদের কয়েকটি টহলদার দলকে আক্রমণ করে। এতে পাকবাহিনীর ১৫ জন সৈন্য নিহত ও ২০ জন আহত হয়। অপরদিকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও একজন আহত হন।

সিলেটি মুক্তিবাহিনীর ২০ সদস্যের একটি মুক্তিযোদ্ধাদল কুমারসাইল গ্রামে এ্যামবুশ করে। পাকসেনাদের একটি দল এ্যামবুশের আওতায় এলে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষে ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়।

ঢাকা স্টেডিয়াম এলাকায় মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল পাকসেনাদের একটি জীপের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে পাকবাহিনীর দু‘জন অফিসার নিহত ও জীপটি বিধ্বস্ত হয়।

মুক্তিবাহিনী খুলনার পীরগাছায় পাকসেনাদের বিরুদ্ধে এক দুঃসাহসিক অভিযান চালায়। এই অভিযানে পাকবাহিনীর একজন জুনিয়র অফিসারসহ তিনজন সৈন্য নিহত হয়।

২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা নয়নপুরে পাকসেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই যুদ্ধে ৫ জন পাকসৈন্য নিহত হয়।

মুক্তিবাহিনী সিলেটের সুনামগঞ্জ এবং সাচনার মধ্যেকার টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করে পাকসেনাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

গোলাম আজমের সভাপতিত্বে জামায়াতে ইসলামী মজলিসে সুরার তৃতীয় দিনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের উপ-নির্বাচন পরিচালনার জন্য গোলাম আজমের নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হচ্ছেন : নুরুজ্জামান,আব্দুল খালেক, গোলাম সারোয়ার, শফিকুল্লাহ।

কাউন্সিল মুসলিম লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এ.কিউ.এম.শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন স্বাধীনতাবিরোধী পশ্চিম পাকিস্তান যান। জানা যায়, তারা পাকিস্তানের পক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টি করার জন্য কানাডাসহ পাশ্চাত্যের বেশ কয়েটি দেশ সফর করবেন।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত নিয়মিত বাংলা কথিকা ‘বিশ্ব জনমত’ ঃ

............... বৃটিশ কমন্সসভার অত্যন্ত প্রভাবশালী সদস্য ফ্রেড ইভান্স বলেছেন : বাংলাদেশ আজ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের এই স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ও বাঁচার অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্যেই বাঙালিরা আজ হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। তারা আজ যে লড়াই করছে তা হলো দেশকে মুক্ত করার লড়াই- শত্রুমুক্তির লড়াই। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সমস্যার সমাধানে বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশেরই এগিয়ে আসা উচিত। অবিলম্বে বাংলাদেশ সমস্যার সমাধান না হলে এশিয়ার এই অঞ্চলের শান্তি বিঘিœত হবে। অবিলম্বে এর সমাধান করতেই হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মূল সমস্যা মানবিক চেতনা ও মানবাধিকারের সমস্যা। আমরা বৃটেনবাসী ১৯৩৯ সালে ফ্যাসিস্ট জার্মানীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে নেমেছিলাম, প্রযোজন হলে নয়া ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে ও যুদ্ধ করতে আমরা প্রস্তুত।...............

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/অ/অক্টোবর ০৫, ২০১৮)