কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে লোন্দা মৌজায় ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক দ্বিতীয় তাপ বিদ্যুৎ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। 

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান রুরাল পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড (আরপিসিএল)-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেড (আরএনপিএল) এর উদ্যোক্তা বিদ্যুৎ প্লান্ট গড়ে তোলার কাজ শুরু করে।

সংস্থার নির্বাহী প্রকৌশলী মো.ইকবাল করীম জানান, ধানখালী ইউনিয়নে লোন্দা,ধানখালী ও নিশানবাড়িয়া মৌজায় ৯১৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন ১৮৪ একর জমি বুঝিয়ে দিয়েছে। আরও ১০০ একর জমি বুঝিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের জন্য ২৫ একর জমিতে আধুনিক গ্রাম তৈরি করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পাঁচ কক্ষের বাড়ি নির্মাণ করা হবে। ৩৫০ জন ক্ষতিগ্রস্তের প্রত্যেককে একটি করে বাড়ি দেয়া হবে। এর সঙ্গে থাকবে বারান্দা ও রান্না ঘর। প্রত্যেকটি বাড়ি নির্মাণে ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসের মধ্যে বাড়িগুলো হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া, এ প্রকল্পে কমিউিনিটি সেন্টার, মসজিদ, স্কুল, দোকানপাট ও খেলার মাঠ থাকবে। চলাচলের জন্য ৩০ ফুট এবং ১২ ফুট প্রশস্ত সড়ক তৈরি করা হবে।

তিনি আরও জানান, প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রির আয় থেকে তিন পয়সা করে রাখা হবে। যা প্রকল্প এলাকার উন্নয়নের জন্য এ অর্থ ব্যয় করা হবে। আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হবে। এই কয়লা ভিত্তিক নির্মিত তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন ১২ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পোড়ানো হবে। এর কোন ছাই বা এ্যাশ পরিবেশের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। কারণ ২৭৫ মিটার উঁচু চিমনি থাকবে। এছাড়া থাকবে এ্যাশ পন্ড। যেখানে ৯৯ ভাগ ফ্লাই এ্যাশ বয়লার টিউবের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তার ছাই শোধন হওয়ার পর একটা নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা হবে। এ ছাই সিমেন্ট কারখানার সিমেন্ট তৈরির জন্য ব্যবহার হবে। ছাই যাতে বাইরে যেতে না পারে, সে জন্য নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পানি ঠাণ্ডা করা হবে।

আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেডের (আরএনপিএল) প্রেস কনসালটেন্ট ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রেস কনসালটেন্ট তালুকদার রুমী জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কয়লা আমদানি করা হবে। এটি বাংলাদেশ এবং চায়না সরকারের যৌথ মালিকানাধীন একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি এ কেন্দ্রটিতে ব্যবহার করা হবে। আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বর নাগাদ উৎপাদনে আসবে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় সংযোগ লাইনে সরবরাহ করা হবে। কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনার পাওয়ার লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপক মো. খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।

(এমকেআর/এসপি/অক্টোবর ০৭, ২০১৮)