স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের বৃহত্তম ও জনপ্রিয় পণ্য উৎপাদানকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপকে ‘ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়াম (বিআরসি) সনদ’ প্রদান করেছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিআরসি সার্টিফিকেশন বডি।

উৎপাদিত পণ্যের গুণগতমান, খাদ্য নিরাপত্তা, উৎপাদনে প্রতিটি ধাপে কমপ্লায়েন্স ও বাজারজাতকরণে মান রক্ষার সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করায় এ সনদ পেল প্রাণ। মৌখিক স্বীকৃতির পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিআরসি সার্টিফিকেশন বডি এ সনদ প্রদান করেছে।

ভারত-পাকিস্তানসহ আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে খাদ্যপণ্য সামগ্রী রফতানি করে আসছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপ। পাশাপাশি ইউরোপের বাজারেও প্রাণের উৎপাদিত পণ্য রফতানি হচ্ছে।

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিআরসি সার্টিফিকেশন বডি কর্তৃক ‘ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়াম (বিআরসি) সনদকে ইউরোপে খাদ্যপণ্য রফতানিতে বড় স্বীকৃতি বলে বলছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর প্রগতি স্মরণীর মেরুল বাড্ডায় প্রাণ-আরএফএল-এর প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা বলেন, আন্তর্জাতিক মান ও কমপ্লায়েন্স মেনে পণ্য উৎপাদন করায় প্রাণ গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রাণ এ্যাগ্রো লিমিটেড ও নাটোর এ্যাগ্রো লিমিটেডকে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরসি সার্টিফিকেশন বডি ‘ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়াম (বিআরসি) সনদ’ প্রদান করেছে।

তিনি বলেন, বিআরসি সার্টিফিকেট হলো বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত একটি সনদ, যার মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের গুণগতমান, খাদ্য নিরাপত্তা ও উৎপাদনে প্রতিটি ধাপে কমপ্লায়েন্স মেনে চলার বিষয়টি নির্দেশ করে। ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে বিআরসি সনদকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়।

ইলিয়াছ মৃধা বলেন, প্রাণ গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের অধীনে প্রাণ গুড়া মশলা, প্রাণ সরিষার তেল, মিস্টার নুডলস, প্রাণ সস-সহ বেশ কয়েকটি পণ্য এই সনদ অর্জন করেছে। এর ফলে ইউরোপ ও আমেরিকায় খুব সহজেই প্রাণের এসব পণ্য পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। ইউরোপ আমেরিকার বড় বড় আউটলেট ও সুপারসপগুলোতে প্রাণের পণ্য সহজেই মিলবে।

তিনি আরও বলেন, প্রাণ সবসময় পণ্য উৎপাদনের প্রতিটি ধাপে গুণগত মান বজায় রেখে ভোক্তার কাছে সেরা পণ্যটি পৌঁছে দিতে চেষ্টা করে। বিআরসির এই সনদ অর্জনের মাধ্যমে ভোক্তার প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতাকে আবারও প্রমাণ করলো।

বাংলাদেশ থেকে মশলা ক্যাটাগরিতে ‘প্রাণ গুঁড়া মশলা’ সর্বোচ্চ পরিমাণ রফতানি হয় উল্লেখ করে ইলিয়াছ মৃধা বলেন, বর্তমানে প্রাণের গুড়া মশলা ১শ’টির বেশি দেশে রফতানি হচ্ছে। এতদিন বিআরসি সনদ না থাকায় ইউরোপের বাজারে আমাদের পণ্য রফতানিতে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এখন এই সনদ অর্জনের ফলে বিশ্বের নানা প্রান্তে বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের মশলা পৌঁছে দিতে পারবো।

তিনি বলেন, দেশের বাইরে প্রাণ গ্রুপ-এর পণ্যসামগ্রী রফতানির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হচ্ছে। এ সনদপ্রাপ্তি শুধুমাত্র প্রাণ গ্রুপ-এর নয়, এটা দেশের জন্য সম্মানের। ইউরোপে পণ্য সামগ্রী রফতানিতে আর প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। এতে দেশে পণ্য সামগ্রীর উৎপাদন আরও বেশি বাড়বে। আমরা কৃষকদের কাছ থেকে আরও বেশি পণ্য ক্রয় করবো। কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হবেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মাঝে প্রাণ গ্রুপ-এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রাণ এ্যাগ্রো লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক শেখ সাজ্জাদ হোসেন, নাটোর এ্যাগ্রো লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার তানভীর হাসান, মিস্টার নুডলস-এর হেড অব মার্কেটিং তোষন পাল এবং প্রাণ গুড়া মশলার ব্র্যান্ড ম্যানেজার মাহামুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ০৮, ২০১৮)