রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গাতে স্থানীয় ক্যাবল (ডিস) ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ নিয়ে এলেঙ্গা পৌর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

স্থানীয়রা জানান, কালিহাতী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আলম মোল্লার ছোট ভাই রাজাবাড়ী গ্রামের আজম মোল্লা, মামুন মোল্লা ও ভাবলা গ্রামের খোকন সরকারের সাথে ক্যাবল (ডিস) ব্যবসা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত সোমবার খোকন সরকারকে রাজাবাড়ী গ্রামের কয়েকজনে মারধর করে। ওই মারপিটের জের ধরে মঙ্গলবার সকালে ভাবলা গ্রামে পাঁচ শতাধিক লোকজন দোষীদের বিচার দাবী করে লাঠিশোঠা নিয়ে মিছিল করতে করতে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেন।

পুলিশ তাদেরকে গ্রামে ফিরে যেতে বারবার অনুরোধ করেন। অপরদিকে রাজাবাড়ী গ্রামের লোকজন লাঠি শোঠা নিয়ে ময়মনসিংহ লিংক রোডের রাজাবাড়ী মোড়ে জমায়েত হয়। তারা এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের দিকে অগ্রসর হলে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। ইট-পাটকেল ও লাঠির আঘাতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষে গুরুতর অবস্থায় কয়েকজনকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি ও এলেঙ্গার বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এসময় এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে সামওয়ান গেইট পর্যন্ত সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা নিমিষের মধ্যে দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন। ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কিছু সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে। যাতায়াতকারীরা ভোগান্তির শিকার হন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ আহাদুজ্জামান মিয়া, কালিহাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নূর-এ-আলম সিদ্দিকী, কালিহাতী সার্কেলের এএসপি মাসুদুর রহমান মনির, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মোল্লা, কালিহাতী থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন প্রমুখ। তারা এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস প্রদান করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এলেঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ভাবলা গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম তালুকদার বলেন, অন্যায়ভাবে আমাদের গ্রামের এক ছেলেকে মারধর করায় আমরা প্রতিবাদ করেছি। অপরাধীদের বিচার চাই।

কালিহাতী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রাজাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের উপেক্ষা করে ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে এতোবড় ঘটনা অত্যন্ত দু:খজনক ও লজ্জাস্কর। এর সুষ্ঠু সমাধান প্রয়োজন।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ডিস ব্যবসাকে কেন্দ্র করে রাজবাড়ীর কয়েকজন লোক ভাবলা গ্রামের একজনকে মারধর করেন। মারপিটের জের ধরেই মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের হয়নি। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।

(আরকেপি/এসপি/অক্টোবর ০৯, ২০১৮)