মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ : হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে বহুল আলোচিত কিশোর সত্যজিৎ হত্যা মামলায় অরবিন্দু দাস (২৯) নামের এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তার সম্পত্তি বিক্রি করে তা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার সকালে জেলা ও দায়রা জজ আমজাদ হোসেন এ রায় দেন। মামলার অপর ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত অরবিন্দু দাশ (৩৩) নবীগঞ্জ উপজেলার চৌকি গ্রামের মনিন্দ্র দাশের ছেলে। আর নিহত সত্যজিৎ দাস বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের প্রবাসী নকুল দাশের ছেলে।

এ মামলায় খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- চৌকি গ্রামের মৃত অক্ষয় দাশের ছেলে অনীল দাশ (৪২) ও সুনীল দাশ (৪৮), একই গ্রামের নৃপেন্দ্র দাশের ছেলে নীরেশ দাশ (২৫), সঞ্জু দাশের ছেলে সুবেন্দ দাশ (২৫), মৃত নারায়ণ দাশের ছেলে প্রদীপ দাশ (৪০), নিবারণ দাশের ছেলে নেপাল দাশ (২৮), মনীন্দ্র দাশের স্ত্রী বিপুলা রাণী দাশ (৫৫) ও তার ছেলে মলয় দাশ (৩২)।

সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে বানিয়াচং উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের প্রবাসী নকুল দাশের ছেলে সত্যজিৎ দাশ (১৪) চৌকি গ্রামে কীর্তন দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এর চারদিন পর ১৫ ফেব্রুয়ারি চন্ডীপুর গ্রামের শ্মশানের পার্শ্ববর্তী ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন সত্যজিতের বোন অলিকা রাণী দাশ বাদী হয়ে চৌকি গ্রামের অরবিন্দুসহ ওই নয়জনকে আসামি করে নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তিনি মামলায় অভিযোগ করেন, আসামিরা পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে তার ভাইকে হত্যা করেছেন। মামলাটি তদন্ত শেষে একই বছরের ১৩ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মার্কুলী পুলিশ ফাঁড়ির তৎক্ষালিন এসআই একরামুল হক ৯ জনকেই অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তদন্ত চলাকালে গ্রেফতারকৃত অরবিন্দু দাশ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পাওনা ১ হাজার টাকা না দেয়ায় সত্যজিৎকে হত্যা করা হয় বলে স্বীকার করেন অরবিন্দু দাশ। দীর্ঘ শুনানি ও রাষ্ট্রপক্ষে ১৮ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ-প্রমাণের ভিত্তিতে বুধবার এ রায় দেন আদালত। রায় ঘোষণাকালে দন্ডিত আসামি সত্যজিৎসহ পাঁচজন উপস্থিত ছিলেন। বাকি চার জন পলাতক।

বাদীপক্ষের আইনজীবী হবিগঞ্জ জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক জানান, হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তির উপযুক্ত শাস্তি হয়েছে। রায়ে বাদীপক্ষের পরিবারও আনন্দিত। অ্যাডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবালসহ কয়েকজন আইনজীবী আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন।

(এমআরএম/এসপি/অক্টোবর ১০, ২০১৮)