আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আগৈলঝাড়ায় এক বিধবা নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে মাথার চুল কেটে পায়ে লোহার শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখার মামলায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

থানায় দায়ের করা ভুক্তভোগী বিধবার এজাহারের বরাত দিয়ে থানা নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন জানান, গত দেড়যুগ আগে উপজেলার রতœপুর ইউনিয়নের রত্নপুর গ্রামের কানন চৌধুরীর স্বামী মারা যায়। স্বামীর মৃত্যুর পর বৃদ্ধা শ্বাশুরী ও ছেলে মেয়েদের নিয়ে দিন মজুরের কাজ করে কোন রকমে স্বামীর ভিটায় বসবাস করে আসছিল কানন। দেড় বছর আগে তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধি মেয়ে বিথী রানীকে মাদারীপুর সদর থানার পূর্ব রাজদী গ্রামের ননী গোপাল দাসের ছেলে মিন্টু দাস এর সাথে বিয়ে দেন তিনি।

মেয়ে বিথীর স্বাভাবিক জ্ঞান বুদ্ধি না থাকায় মেয়ে ও মেয়ে জামাতা ঝন্টুকে কানন তার নিজের বাড়িতে রেখে সেখানে তার নিজের সম্পত্তিতে বসত ঘর নির্মান করতে কিছু গাছ কাটেন। মেয়ে জামাতাকে ঘর জামাই রাখতে ও গাছ কাটতে বাধা দেয় একই বাড়ির লোকজন। তারা বিথী ও বিথীর জামাতা ঝন্টুকে ওই বাড়িতে থাকিতে দেবে না বলে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধামকী দিয়ে আসছিল।

বাড়ির লোকজনের বিরোধিতার পরেও মেয়ে বিথী ও মেয়ে জামাতা ঝন্টুকে বাড়ি রাখায় ওই বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে বিধবার বিরুদ্ধে অপমানজনক মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর খুব সকালে বিধবার বসত ঘরে প্রবেশ করে তার উপর মধ্যযুগীয় হামলা চালায়। মেয়ে জামাতা মিন্টু তার শ্বাশুরীকে বাচাতে এগিয়ে এলে তাকেও এলোপাথারী মারধর করে জখম করে তারা। এসময় বিধবাকে জোর করে আটকে তার মাথার চুল কেটে দিয়ে পায়ে লোহার শিকল দিয়ে খুঁটির সাথে বেধে রাখে হামলাকারীরা।

ওই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী বিধবা কানন চৌধুরী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন, নং-৫, (৯.১০.১৮)। ওই মামলায় নির্যাতনকারী একই বাড়ির মৃত রাজ্যেশ্বর চৌধুরীর ছেলে উত্তম চৌধুরী (৪৫ কে মঙ্গলবার রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জামাল হোসেন নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন। বুধবার সকালে গ্রেফতারকৃতকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ১০, ২০১৮)