লাকসাম প্রতিনিধি : কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের সালেহপুর গ্রামের নিজ বসত ঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে স্ত্রী রাবেয়া বেগম (২৮) এর গলাকাটা ও স্বামী শফিউল্লাহকে সিলিংয়ের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সহকারী সিনিয়র এ.এস.পি (লাকসাম সার্কেল) মোঃ নাজমুল হাছান ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোজ কুমার দে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে স্বামী শফিউল্লাহ তার স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে আসল রহস্য। পুলিশ দুইজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত শফিউল্লাহর দ্বিতীয় স্ত্রী রাবেয়া বেগম। শফিউল্লাহ এলাকায় কৃষিকাজ করতেন এবং তিনি কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর আগের স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হওয়ার পর তিনি রাবেয়া বেগমকে বিয়ে করেন। আগের সংসারে জাহিদ নামে তাঁর একটি ১৫ বছর বয়সী পুত্রসন্তান রয়েছে। আর রাবেয়া বেগমের ঘরে সাথী আক্তার নামে ১০ বছরের এবং নুসরাত জাহান সাইফা নামে ৪ বছরের দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। বাড়ির উঠানে ছোট মেয়ে সাইফাকে কাঁদতে দেখে আশপাশের লোকজন এসে জানালা দিয়ে তাদের দুজনের মরদেহ দেখে থানা পুলিশে খবর দেয়।

শফিউল্লাহর ছোট মেয়ে নুসরাত জাহান সাইফা জানায়, রাতে সে তার মা’র সাথে ঘুমিয়েছিল। সকালে উঠে সে বাবা-মাকে কথা না বলতে দেখে এবং মায়ের গলাকাটা লাশ দেখে ঘরের দরজা খুলে বাহিরে এসে কাঁদতে থাকে।

স্থানীয় এলাকাবাসী আরো জানায়, শফিউল্লাহ দীর্ঘদিন থেকে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। তাকে পাবনা এবং পার্শ্ববর্তী উপজেলা নাঙ্গলকোট মানসিক হসপিটালে চিকিৎসা করানো হয়েছে। আশপাশের মানুষকেও সে মারধর করতো মাঝে মাঝে। বিগত প্রায় ২বছর পূর্বে তার স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করে এবং বর্তমানেও তার স্ত্রীকে মাঝে মাঝে ব্যাপক মারধর করে।

এ বিষয়ে লাকসাম থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মনোজ কুমার দে জানান, আমরা এলাকাবাসীর কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে এসে মরদেহ দুটি উদ্ধার করেছি। নিহত স্ত্রী রাবেয়া বেগমের মরদেহটি আমরা গলা কাটা অবস্থায় উদ্ধার করি এবং তাঁর স্বামী শফিউল্লাহর মরদেহটি ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে ময়না তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।

(সিএস/এসপি/অক্টোবর ১০, ২০১৮)