স্টাফ রিপোর্টার : নোয়াখালীর ভাসান চরে ২৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে নেওয়ার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সেখানে ২৫ হাজার হাজার পরিবারকে নিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

ভাষানচরে কবে নেওয়া হবে জানতে চাইলে ত্রাণমন্ত্রী বলেন, সব রেডি, প্রধানমন্ত্রী যেদিন বলবেন, সেদিনই। আমরা প্রস্তুত।

অল্প সময়ে ভাসানচর প্রস্তুত করায় নৌবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি বলেন, আমি নৌবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই। না গেলে বুঝতে পারবেন না। সবমিলে সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গাকে অস্থায়ীভাবে নেওয়ার কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।

নির্যাতনের মুখে এক বছর আগে আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ায় তাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় এবং খাবার ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা যখন আসলো তখন তাদের চেহারা ছিল হাড্ডিসার। কাপড় নাই, বস্ত্র নাই। এদের দেখলে ভয় লাগতো। এখন যদি যান, তাদের যদি দেখেন, আপনাদের কী অবস্থা এর চেয়ে ভালো অবস্থা। হৃষ্টপুষ্ট, কোরবানির ঈদ করতেছে। এগুলো হলো বাস্তব।

সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মায়া বলেন, শেখ হাসিনা কী কাজ করেছেন সেখানে, চলেন একদিন যাই। বাস ভরে দেখে আসি।

২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ‘আশ্রয়ন-৩ (নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানাধীন চর ঈশ্বর ইউনিয়নস্থ ভাসানচরে ১ লক্ষ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আবাসন এবং দ্বীপের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ)’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ২ হাজার ৩১২ কেটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। পুরোপুরি সরকারি অর্থায়নের এ প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারিত আছে।

ভাষানচরে বানানো চারতলা সাইক্লোন সেল্টারগুলো বহুমুখী কাজে ব্যবহার করা হবে জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, সেখানে মেডিকেল সেন্টার হবে, বাচ্চাদের পড়ানো হবে; মাছ চাষ ও গরু, মহিষ, ভেড়া পালনের সুযোগ থাকবে।

নোয়াখালী জেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নে ভাসানচরের অবস্থান। নোয়াখালী থেকে এর দূরত্ব ২১ নটিক্যাল মাইল।

ভাসানচরের আয়তন জোয়ারের সময় ১০ হাজার একর এবং ভাটার সময় ১৫ হাজার একর। জনমানবহীন চরটি মূলত গরু-মহিষের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ২০১৩ সালে এ চরকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকা ঘোষণা করা হয়। ইঞ্জিনচালিত নৌযান ছাড়া সেখানে যাতায়াতের সুযোগ নেই। হাতিয়া থেকে যেতেও তিন থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে।

(ওএস/অ/অক্টোবর ১১, ২০১৮)