স্টাফ রিপোর্টার : প্রশ্নফাঁসে ব্যর্থ হয়ে নিজের মন মতো প্রশ্ন তৈরি করে প্রলোভন দেখিয়ে আসছিল একটি চক্র। শতভাগ কমনের নিশ্চয়তা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেসব ভুয়া প্রশ্ন সরবরাহ করে চক্রটি হাতিয়ে নিতো বিপুল পরিমাণ অর্থ।

বুধবার (১০ অক্টোবর) দিনগত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ভুয়া প্রশ্ন সরবরাহকারী ওই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা (নং-১) দায়ের করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কাওসার গাজী, সোহেল মিয়া, তারিকুল ইসলাম শোভন, রুবাইয়াত তানভির ওরফে আদিত্য ও মাসুদুর রহমান ইমন।

এসময় তাদের কাছ থেকে ৫টি মোবাইল, ২টি ল্যাপটপ ও বিকাশের একটি রেজিস্টার খাতা উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মালীবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম।

প্রশ্ন ফাঁসকারী প্রতারণা চক্রের মূলহোতা কাউসার গাজীর বরাতে তিনি জানান, বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক নজরদারির মধ্যে তারা প্রশ্ন ফাঁস করতে পারে না। তাই বিগত বছরের মেডিকেলের প্রশ্ন ও সাজেশনস মিলিয়ে নিজেদের মতো করে প্রশ্ন তৈরি করে। পরে ফেসবুকে বিভিন্ন ভুয়া আইডি ও মেসেঞ্জার, ভাইবার, হোয়াটস অ্যাপে প্রশ্ন ফাঁসের প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করতো।

তিনি জানান, মাস্টারমাইন্ড (মূলহোতা) কাউসার গাজীকে এ কাজে সহযোগিতা করতো তার বন্ধু সোহেল মিয়া। সে অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভুয়া বিকাশ একাউন্ট খোলার মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতো।

গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজ করছে তারা। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে না পারায় তারা ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে দশটি ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মেডিকেলের প্রশ্ন পাওয়া যায় বলে প্রচারণা চালাতো এবং শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করতো।

আসামি শোভন suzon.mahmud17 নামে ফেসবুকের আইডি খুলে মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র টাকার বিনিময়ে দিতে পারবে বলে প্রচারণা চালায়। তার এই ফেসবুকের মাধ্যমে প্রচারণায় প্রলুব্ধ হয়ে অনেকে তার ব্যবহৃত মোবাইলে যোগাযোগ করে এবং পরে বিকাশ নাম্বারের মাধ্যমে অগ্রিম অর্থ সংগ্রহ করে প্রতারণা করতো।

এক প্রশ্নের জবাবে মোল্যা নজরুল বলেন, আটকদের পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যাবে তারা আনুমানিক কতো টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে।

(ওএস/অ/অক্টোবর ১১, ২০১৮)