আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপাইনজুড়ে শক্তিশালী টাইফুন রামাসানের আঘাতে বৃহস্পতিবার ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। রাজধানী ম্যানিলাসহ দেশটির অন্যান্য স্থানে লাখ লাখ লোক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।

টাইফুনের তাণ্ডবে রাজধানী ম্যানিলার অর্থ বাজার, বিভিন্ন দফতর ও স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় ঝড়ে টিনের ছাদ উড়ে গেছে ও গাছপালা উপড়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকাগুলো থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
এই টাইফুনটি চলতি বছর দেশটিতে আঘাত করা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়। শক্তিশালী টাইফুন রামাসানের আঘাতে ১০ জন আহত ও ৮ জন নিখোঁজ হয়েছে।
বুধবার ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র ম্যানিলার দক্ষিণ দিক দিয়ে পার হয়ে গেছে। এতে দেশটির বৃহত্তম দ্বীপ লুজনের এক পাশ থেকে অপর পাশ পর্যন্ত উপড়ে পড়া গাছ ও বিদ্যুৎ খুঁটি বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে আছে। এতে ব্যাপক বিদ্যুৎহীনতার পাশাপাশি বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনাও ঘটেছে।
লুজোনের প্রধান সড়কগুলো ঝড়ের তাণ্ডবে উড়ে আসা বস্তুতে, উপড়ে পড়া গাছ ও বিদ্যুৎ খুঁটিতে অবরুদ্ধ হয়ে আছে। ঝড়ে ম্যানিলায় গাছ উপড়ে পড়েছে, রাস্তার পাশের পাম গাছগুলো ভয়ানকভাবে বাঁকা হয়ে গেছে এবং বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংগুলো রাস্তায় আছড়ে পড়েছে।
তবে প্রবল ঝড় বয়ে গেলেও সঙ্গে বৃষ্টি না থাকায় রাজধানীর কোথাও বন্যা হয়নি বলে জানিয়েছেন ফিলিপাইন রেডক্রসের চেয়ারম্যান রিচার্ড গর্ডন।
রাজধানী ম্যানিলায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে ম্যানিলার দক্ষিণে ব্যাটাঙ্গস শহরে ঝড়ে উড়ে আসা আবর্জনার স্তূপে কিছু লোক চাপা পড়েছে এবং রেডক্রসের কর্মীরা তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কর্মকর্তারা লুজন শহরের মাত্র অর্ধেক বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করতে পেরেছে। শহরটিতে ১ কোটি ৭০ লাখ লোকের বাস।
এই শহরটিতে দুজন তড়িতাহত হয়ে মারা গেছেন। মঙ্গলবার দক্ষিণ উপকূলে ঝড়ের প্রথম আঘাতে একটি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ২৫ বছর বয়সী এক নারী মারা গেছেন। লুসেনা শহরে একটি বাড়ির দেয়াল ধসে এক গর্ভবতী নারীর মৃত্যু হয়েছে।
ফিলিপাইনের অনেক অংশ এখনো বিশ্বের অন্যতম প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় হাইয়ানের আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
২০১৩ সালের নভেম্বরে দেশটির কেন্দ্রীয় প্রদেশগুলোতে আঘাত হানা ওই ভয়াবহ ঝড়ে ৬১০০ জন মানুষ নিহত হয়েছিলেন।
(ওএস/এএস/জুলাই ১৭, ২০১৪)