মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নেত্রকোনার মদন উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাঁচকুনিয়া ও পরাজকুনিয়া হাওরের ফসল রক্ষা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ি বাঁধ কেটে মাছ নিধন করছে এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা। এ ব্যাপারে ৮ অক্টোবর প্রশাসনের বরাবরে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ করেও রোববার পর্যন্ত কোন সুফলতা না পাওয়ায় পানি নিচে নেমে যাওয়ায়  বোরো ধানের আবাদ নিয়ে আশঙ্খায় ভুগছেন এলাকার কৃষকগণ।

অভিাযোগে প্রকাশ, মদন উপজেলার দক্ষিনপাড়া গ্রামের আওয়াল, রুহুল আমীন সহ ৯/১০ জন ব্যাক্তি মাছ ধরে নিজেরা লাভবান হওয়ার লক্ষে চলতি অর্থ বছরে দশ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে নির্মিত পানি উন্নয়ন বোর্ডরের ফসল রক্ষা পাচকুনিয়া ও পরাজকুনিয়া হাওরের বেড়ি বাধঁ কেটে পানি ছেড়ে মাছ নিধন করায় সমস্ত হাওরের টানের জমির পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে বোরো ধান আবাদের সময় ওই জমিগুলো পানির অভাবে অনাবাদি থাকার আশঙ্খা রয়েছে।

এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর পক্ষে কাওসার মিয়া গত ৮ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়েরে করেছেন। অভিযোগের কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকগণ অসস্থিতে ভুগছেন। রোববার পর্যন্ত উক্ত বেড়ি বাধ কেটে মাছ ধরা অব্যাহত রয়েছে।

এ ব্যাপারে মদন ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য আবুল কাশেম মানিক জানান, সরকার কৃষকদের দুরাবস্থা দূরিকরণের লক্ষে দশ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে পাচকুনিয়া ও পরাজকুনিয়া হাওরে ফসল রক্ষা বেড়ি বাধঁ নির্মাণ করেন। এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা নিজেরা লাভবান হওয়ার আশায় বেড়ি বাধঁ কেটে মাছ নিধনের জন্য জেলেদের কাছে লক্ষাধিক টাকা পত্তন করে দেয়। জেলেরা তাদের ইচ্ছা মাফিক মাছ ধরায় বাধঁটির কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে কর্তৃপক্ষের দ্রুত আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তিনি।

অভিযুক্ত প্রভাবশালী আওয়াল, রুহুল আমীন , ফারুক জানান, বেড়ি বাধেঁর ভিতরে আমাদের জমি পত্তন দিয়েছি মাছ নিধনের জন্য। কিন্তু বেড়ি বাধঁ কেটে মাছ নিধনের জন্য নয়। এই বাধঁটি এমনিতেই ভেঙ্গে যায়।
এ ব্যাপারে মদন ইউপি চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান শেখ মানিক জানান, আমি শুনেছি বেড়ি বাধঁ কেটে হাওরের পানি শুকিয়ে মাছ নিধন করছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

ইজারাদার নজরুল ইসলাম জানান, আমি দক্ষিনপাড়া গ্রামের আওয়াল ,রুহুল আমীন, জলিল, ফজলে রাব্বির কাছ থেকে মাছ ধরার জন্য উক্ত জমিগুলো এক বছরের জন্য ৬০ হাজার টাকায় পত্তন নিয়েছি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিবারন চক্রবর্তী জানান, বেড়ি বাধঁ কেটে মাছ নিধনের অভিযোগ পেয়েছি। স্থানীয় প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ওয়ালীউল হাসান জানান,এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বেড়ি বাধঁ কেটে মাছ ধরার লোকজনদের কে ডেকে অফিসে আনলে তারা কাটা বেড়ি বাধঁ বেঁেধ দিয়ে আর মাছ ধরবে না বলে অঙ্গিকার নামায় স্বাক্ষর করে যায়।

(এএমএ/এসপি/অক্টোবর ১৪, ২০১৮)